Tuesday, September 2, 2014

বাংলাদেশের রাজনীতিতে গুণগত পরিবর্তনের গল্প (4)

বিকল্প ধারা আত্নপ্রকাশের পর থেকে উঠতে দেয়নি বিএনপি।

শুরুর দিকে সবাই পরিবর্তন চাইত। বাংলাদেশের মানুষ এই অপরাজনীতি থেকে সবসময় মুক্তি চেয়েছে। পেশীশক্তি ব্যবহার করে [মেজর মান্নান সাহেবের উপর হামলা],ভয় দেখিয়ে থামিয়ে দেয় বিএনপি। কুৎসা রটানো, হাস্যরস করা, "পরিবর্তন অসম্ভব" বলে প্রচার করা, মিডিয়া ব্যবহার করা - এসবে আওয়ামী লীগের কিছু নেতাও পিছিয়ে ছিল না। আওয়ামী লীগের ঐ নেতারা ভাবেন, দেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি শুরু হলে তারা তাদের অপকর্ম চালাতে পারবেন না। দুই দল নতুন দলকে ওদের দুর্নীতি, যে কোন প্রকারে ক্ষমতা দখল করে রাখা, অবৈধ অর্থের রাজনীতির দিকে threat বলে বিবেচনা করে।

২০০৮ এর নির্বাচনের আগে বিকল্প ধারা - গণফোরামকে পুরোপুরি শেষ করে আওয়ামী লীগের কিছু নেতার ইঞ্জিনিয়ারিং।
[আওয়ামী লীগে কিছু মাফিয়া - গডফাদার আছে। এরা আওয়ামী লীগের শীর্ষ নেতৃত্বকে উলটা পাল্টা বুঝিয়ে মাসের পর মাস Youtube পর্যন্ত বন্ধ করে রাখে। তথ্যপ্রযুক্তির জঘন্য এবং বাংলাদেশের প্রতিটি পরিবারের জন্য ভয়াবহতম ব্যবহার এরা করে। বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক ডেপুটি গভর্নর খোন্দকার ইব্রাহীম খালেদের লেখায় শেয়ারবাজারে এই মাফিয়া - গডফাদারদের ভূমিকা উঠে এসেছে।]  

এজন্যই লিখেছিলেম - কেউ সুস্থ ধারার নতুন রাজনীতি শুরু করতে চাইলে আওয়ামী লীগ - বিএনপি অনেকটা "সিন্ডিকেট" তৈরি করে তাকে থামিয়ে দেয়। গত দেড় দশকে কয়েকবার আমরা এটি ঘটতে দেখেছি। দুই দল নতুন দলকে ওদের দুর্নীতি, যে কোন প্রকারে ক্ষমতা দখল করে রাখা, অবৈধ অর্থের রাজনীতির প্রতি threat বলে বিবেচনা করে।
দেশের প্রায় সমস্ত কিছু সরকারের নিয়ন্ত্রণে; কালো টাকা দিয়ে যতটুকু পারে কিনে ফেলে।

আমরা পুরো পরিবার রাজনীতিতে সবসময়ই পরিবর্তন চেয়েছি। প্রফেসর ড. ইউনূস, বিকল্প ধারা, গণফোরাম, কর্নেল ড. অলি আহমেদ, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগ - আমাদের স্বপ্ন দেখার অবলম্বন ছিল।
দেশে সুস্থ ধারার রাজনীতি শুরু হোক - এটা সবাই চায়। আমার ধারণা, বিএনপি আওয়ামী লীগ নেতাদের পরিবারের বাইরে প্রায় সব পরিবারেই এটা সত্যি।
স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ পদত্যাগ করার পর তরুণ প্রজন্মের আকুতি আমরা লক্ষ্য করেছি।
 
বেশ কয়েকবছর আগের কথা। আমার ছোট ভাই তখন কলেজে পড়ত। আমাকে এসে বলল, আমাদের কলেজে আমরা সবাই বিকল্প ধারা।

মাহী বি. চৌধুরী ও বোধহয় জানেন না - বাংলাদেশের মানুষ কি প্রচন্ডভাবে পরিবর্তন চেয়েছে। "ব্লু ব্যান্ড কল" গঠন করার পর তরুণদের response মাহী দেখেছিলেন। কিন্তু সরকার এই প্রচেষ্টাকেও দ্রুত থামিয়ে দিয়েছিল।

পরে আমার ভাই আমাকে বলেছে, তরুণদের একটা দল হওয়া দরকার।




গত বছরের কথা।

আমার ছোটভাইকে জিজ্ঞেস করছিলাম, সে রাজনীতিতে কাকে কাকে পছন্দ করে?

আমাকে বলল, প্রফেসর ড. ইউনূস রাজনীতিতে এলে দারুণ হবে। বিকল্প ধারা, ড. কামাল হোসেনের সে সবসময়ই ভক্ত। ড. শাহদীন মালিকের লেখা সে প্রথম আলোতে পড়ে। গণজাগরণ মঞ্চ তো অবশ্যই। সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ এর কথা সবসময় মনে থাকবে। ওর বন্ধুরা ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থর কথা বলেছে।

আমি ওকে বললাম, সবাই মিলে একটা দল করলে কেমন হবে? 

আমার ভাইয়ের চোখে আনন্দ উঁকি দিল।

ওকে বলেছিলাম, অপেক্ষা করতে।

আমার ধারণা, পাঠকের চোখেও আনন্দ উঁকি দিচ্ছে। নাকি আবেগের অশ্রু বলব?

প্রফেসর ড. মুহাম্মদ ইউনূস, জেনারেল হাসান মশহুদ চৌধুরী, প্রফেসর এ কিউ এম বদরুদ্দোজা চৌধুরী, ড. কামাল হোসেন, প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল এম. সাখাওয়াত হোসেন, মাহী বি. চৌধুরী, তানজিম আহমেদ সোহেল তাজ, ব্যারিস্টার আন্দালিব রহমান পার্থ - সবাই একমঞ্চে দাঁড়ালে বাংলাদেশের মানুষের চোখে আনন্দ নাকি অশ্রু উঁকি দেবে বলা কঠিন!  

No comments:

Post a Comment