Friday, October 25, 2013

আদর্শ রাজনৈতিক দলের নির্বাচনী ক্যাম্পেইন পরিকল্পনা

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি নির্বাচনী ক্যাম্পেইন পরিকল্পনায় গতানুগতিকতা থেকে বেরিয়ে এসে সৃজনশীলতা দেখাবে।


জরিপ করে জনগণের মন, জনগণের আশাআকাঙ্ক্ষা বোঝার উদ্যোগ নেওয়া হবে – কারা “ক” দলকে ভোট দেবেন? কি কি কারণে? কারা “খ” দলকে ভোট দেবেন? কি কি কারণে? (এসব ভোট কিভাবে নিজেদের পক্ষে আনা যায়?) অতীতে কোনবার কোন দল বা প্রার্থীকে ভোট দিয়েছেন? কেন? ভিন্ন দলকে ভোট দিলে সমর্থন পালটানোর কারণ কি? এলাকার উন্নয়নে কি কি দেখতে চান? কি কি সমস্যার সমাধান চান? (প্রার্থী হিসেবে কাল টাকার মালিক থাকলে তিনি কিভাবে নির্বাচনকে প্রভাবান্বিত করতে পারেন? কতটা?)

জনগণের গঠনমূলক সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহণ করে প্রার্থীরা নিজেদের ভুলভ্রান্তি দূর করে কর্মকাণ্ড আরও উন্নততর করার কাজে ব্যবহার করবেন।

প্রতিটি নির্বাচনী সভায় জনগণকে তাদের আশা আকাঙ্ক্ষা প্রত্যাশার কথা বলার সুযোগ দেওয়া হবে। আধুনিক প্রযুক্তি যেমন ভিডিও চিত্রের (বিভিন্ন এলাকার জন্য উপযোগী করে প্রয়োজনে স্থানীয় ভাষায়) মাধ্যমে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে জনগণ উজ্জীবিত হবে।

আধুনিক যোগাযোগ মাধ্যম যেমন ভিডিও কনফারেন্সিং, ইন্টারনেট ভিত্তিক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম, মোবাইল প্রযুক্তির ব্যবহার করা হবে।

সবাইকে নিয়ে সমস্যা সমাধানের উদ্যোগ নেওয়া হবে। এলাকার প্রতিষ্ঠিত বেক্তিরা এগিয়ে আসবেন, বাবসায়িরা সামাজিক এন্টারপ্রাইস প্রতিষ্ঠা করবেন। এলাকার জনগণ একতাবদ্ধ হয়ে নিজেরা নিজেদের সমস্যা সমাধান করবেন।


এভাবে রাজনীতিতে মেধার প্রয়োগ দেখিয়ে দলটি দেশে নতুন রাজনীতির শুভ সূচনা করবে।

Monday, October 21, 2013

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি যেভাবে জনগণের কাছে পৌঁছাবে

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি দ্রুত দলের মূলনীতি ঘোষণা দিয়ে জনগণের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে।

উপস্থিতি প্রথম থেকেই জনগণের কাছে দৃঢ়তার সাথে জানানো হবে। বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের প্রতিনিধিত্ব থাকবে।


বাংলাদেশের মানুষ পরিকল্পনাবিহীন অপরাজনীতি দেখে অভ্যস্ত। জনগণ জানে না সুপরিকল্পিত সুশাসন দেশকে কোথায় নিয়ে যেতে পারে। বাংলাদেশ সঠিকভাবে পরিচালিত হলে স্বপ্নের বাংলাদেশ কেমন হবে তার এবং সেই স্বপ্নের বাংলাদেশে বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের জীবনের একটা চিত্র জনগণের সামনে আধুনিক প্রযুক্তি ব্যবহার করে তুলে ধরে জনগণকে সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশের স্বপ্নে উজ্জীবিত করা হবে। দৃঢ়তার সাথে জনগণকে জানানো হবে স্বপ্নের বাংলাদেশের লক্ষ্যে পরিবর্তন এবারই আসছে।

জাতি ধর্ম বর্ণ শ্রেণী পেশা নির্বিশেষে কারও উপর যাতে কখনও অন্যায় না হয়, জনগণকে এলাকায় এলাকায় ঐক্যবদ্ধ হয়ে তা নিশ্চিত করতে আহ্বান জানান হবে এবং দলটি এক্ষেত্রে জনগণের পাশে থাকবে। এটি যেহেতু জনগণের দল হবে কাজেই জনগণ সব ধরণের মাধ্যম ব্যবহার করে যাতে দলটির কাছে প্রত্যাশা, মতামত, আশা আকাঙ্ক্ষা তুলে ধরতে পারে সে বাবস্থা নেওয়া হবে।

দলটিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো (ফেইসবুক, ব্লগ, ওয়েব সাইট, মোবাইল ইত্যাদি) ব্যবহার করে জনগণের মতামত, আশাআকাঙ্ক্ষা বোঝার চেষ্টা করবে।

আদর্শ দলের নেতারা জানেন, জনগণের পাশে দাঁড়ালে, জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা বোঝার চেষ্টা করলে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করলে, জনগণও তাদের পাশে থাকবে।
দলটি দেশের জনসংখ্যাকে বিভিন্ন ডেমোগ্রাফিকে বিভক্ত করে ভিন্ন ভিন্ন ডেমোগ্রাফিকের কাছে আলাদা আলাদা ভাবে পৌঁছাবে।
তরুণদের কাছে পৌঁছাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে ব্যবহার করবে। তরুণদের জন্য প্লাটফর্ম তৈরি করে দেবে যাতে ওরা বিভিন্ন উদ্যোগ নিতে পারে।
গ্রামের গরিব দুঃখী অসহায় মানুষগুলোর পাশে গিয়ে তাদের সমস্যা বোঝার চেষ্টা করবে। গ্রামের বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা সবাই মিলে সমাধানের উদ্যোগ নেবে।
শ্রমিকদের ন্যায্য অধিকার আদায়ে তাদের পাশে দাঁড়াবে।
বাবসায়িদের বাবসাবান্ধব পরিবেশ সৃষ্টির উপায় নিরুপন করে উদ্যোগ নেবে।
সৎ বিনিয়োগকারিদের অভিযোগগুলো বোঝার চেষ্টা করবে।
দেশের সম্পদ রক্ষায়, দেশের বৃহত্তর কল্যাণে যারা কাজ করছে তাদের পাশে গিয়ে দাঁড়াবে।
বিভিন্ন ক্ষেত্রে যারা অন্যায় করছে, দুর্নীতি করছে, সেই অন্যায়, দুর্নীতিগুলোর বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে অবস্থান নেবে।

জনগণকে নিয়ে বিভিন্ন সমস্যা কিভাবে সমাধান করা যায় – তা সবাই মিলে নির্ধারণ করে সম্মিলিতভাবে বাবস্থা নেবে।

প্রতিটি কাজে জনগণকে সম্পৃক্ত করবে।

আমাদের রাজনীতি সচেতন জনগণও শুধুমাত্র চায়ের কাপে নেতানেত্রীদের আলোচনা - সমালোচনার মাঝে রাজনীতিকে সীমাবদ্ধ রাখবেন না, বরং তারাই হবেন রাজনীতির সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ অংশ - তাদের কেন্দ্র করেই দেশের রাজনীতি পরিচালিত হবে - আদর্শ দল তা নিশ্চিত করবে।

আদর্শ রাজনৈতিক দলের নেতারা ইতিহাসের মহানায়কদের মত জানেন, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির, ভিন্ন আদর্শ, মূল্যবোধে বিশ্বাসী মানুষকে নতুন সঠিক দৃষ্টিভঙ্গি দেখাতে পারলে তারা তা গ্রহণ করবেন। তারা নিজেরাও নিজেদের সবজান্তা ভাবার ধৃষ্টতা না দেখিয়ে, নিজেদের পথই একমাত্র সঠিক পথ না ভেবে, ভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি, ভিন্ন মূল্যবোধ গভীরভাবে বোঝার এবং গ্রহণ করার মানসিকতা দেখাবেন। সমগ্র দেশের চেতনাকে ধারণ করতে তারা বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গির মানুষদের দূরত্ব দূর করে একতাবদ্ধ করবেন।


পাশাপাশি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলো ব্যবহার করে কেউ যেন মিথ্যা অপপ্রচার চালাতে না পারে, গুজব রটাতে না পারে – সেই লক্ষ্যে সচেতনতা সৃষ্টি এবং দৃঢ় অবস্থান নেবে।

স্বপ্নের বাংলাদেশ কেমন হবে তা বিভিন্ন শ্রেণী পেশার মানুষের জন্য উপযোগী করে, বিভিন্ন স্থানের উপযোগী করে ভিন্ন ভিন্ন ভিডিও চিত্রে (প্রয়োজনে আঞ্চলিক ভাষায়) ফুটিয়ে তোলা হবে।

পরবর্তীতে জনগণ কিভাবে সম্মিলিতভাবে সেই লক্ষ্যে কাজ করছে তাও চিত্রিত করে সবাইকে অনুপ্রাণিত করা হবে।

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারঃ কিছু প্রস্তাব - ২

রাজপথ থেকে সরে এসে সরকারি দল এবং প্রধান বিরোধী দলের নির্বাচনকালীন সরকার প্রস্তাবের মাঝে আমরা দেশের জনগণ নতুন রাজনীতির আলো দেখি।

তবে উভয়ে নিজ নিজ অবস্থানে থাকলে আমরা তৃতীয় একজনের প্রয়োজনীয়তা অনুভব করছি।

এই তৃতীয় একজনের ভূমিকা নিতে পারেন একজন নিরপেক্ষ গ্রহণযোগ্য দৃঢ়চেতা অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান।

ভোটের দিন ও ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত নিরপেক্ষ পরিবেশ ধরে রাখার জন্য এবং একটি সুষ্ঠু , নিরপেক্ষ, গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের স্বার্থে আমরা স্বরাষ্ট্র, সংস্থাপন এবং অন্যান্য স্পর্শকাতর মন্ত্রনালয়গুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের নিরপেক্ষ উপদেষ্টাদের হাতে নাস্ত করার প্রস্তাব জানাই।

মন্ত্রীসভা এবং উপদেষ্টা পরিষদ নিয়ে গঠিত অন্তর্বর্তীকালীন সরকার একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতা হস্তান্তর করবে।



বিরোধী দলীয় নেতার প্রতিশোধ – প্রতিহিংসার রাজনীতি থেকে দূরে থাকা, মেধাবী ও যোগ্য নাগরিকদের আগামী দিনের জাতীয় ঐক্যের সরকারের সঙ্গে কাজ করার আগাম আমন্ত্রণ – এসব ঘোষণাকে আমরা ইতিবাচক দৃষ্টিতে দেখি।

তবে আমরা সচেতন নাগরিকরা অতীতেও উভয় দলের কাছে এমন অনেক প্রতিশ্রুতি শুনেছি যেগুলোর সঠিক বাস্তবায়ন দেখিনি। আমরা আগামী নির্বাচনের আগেই সরকারি দল এবং প্রধান বিরোধী দলের ঘোষণার বাস্তবে প্রতিফলন দেখতে চাই, কথায় এবং কাজে সামঞ্জস্যতা দেখতে চাই।

Sunday, October 20, 2013

প্রতিহিংসা - অপপ্রচার নয়, চাই উন্নয়নের রাজনীতি

একজন সম্মানিত মানুষ সারাজীবন তিল তিল করে একটি প্রতিষ্ঠানকে দাঁড় করিয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটির উপর কাজের কারণে নোবেল পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন, প্রতিষ্ঠানটিকে এমনভাবে গড়ে তুলেছেন যে বাবস্থায় গ্রামের দরিদ্র মহিলারা প্রতিষ্ঠানটির মালিকানায় (প্রতিষ্ঠানের ৯৭ শতাংশ মালিকানা গরিব মহিলাদের হাতে) এসেছে। সেই প্রতিষ্ঠান – গ্রামীণ ব্যাংক থেকে তাঁকে সরিয়ে দেওয়া শুধুমাত্র অন্যায় নয়, এটি দেশে দারিদ্র্য দূরীকরণে, নারীর ক্ষমতায়নে বিশাল ভূমিকা রাখা, দেশের প্রায় ৮৪ লক্ষ মানুষ যে প্রতিষ্ঠানের সাথে নিজেকে যুক্ত করে লাভবান হয়েছেন এবং হচ্ছেন, অন্যান্য দেশেও যে প্রতিষ্ঠানটির আদলে প্রতিষ্ঠান তৈরি হয়েছে, সেই প্রতিষ্ঠানটি ভবিষ্যতে সঠিকভাবে চলবে কিনা তা নিয়েও সংশয় তৈরি করে দিয়েছে। শুধুমাত্র রাজনৈতিক প্রতিহিংসার কারণে অন্যায় করা, না বুঝে অপপ্রচার চালানো এবং দেশের ক্ষতি করা – এমন রাজনীতি দেশে চলতে পারে না।
ড. মুহম্মদ ইউনুস এর
  • মেধা (নোবেল শান্তি পুরষ্কার বিজয়ী, ২০০৬; বিশ্বব্যাপী ক্ষুদ্রঋণ এবং সামাজিক ব্যবসার প্রবর্তক)
  • সততা (বর্তমান সরকার সকল শক্তি ব্যবহার করেও কিছু খুঁজে পায়নি) 
  • প্রশাসনিক দক্ষতা (বাংলাদেশ সহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশে নিজ মডেলের উপর ভিত্তি করে প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলেছেন)
প্রশ্নাতীত।

আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে তার যে ব্যাপক সুপরিচিতি আছে তা ব্যবহার করে বিভিন্ন দেশের সাথে সম্পর্ক জোরদার করা, কূটনৈতিক উদ্যোগ নেওয়া (বিভিন্ন সুবিধা যেমন বাণিজ্য সম্প্রসারণ, শুল্কমুক্ত প্রবেশ ইত্যাদি) - সরকার এসব করতে পারত।

তা না করে প্রতিহিংসার বশবর্তী হয়ে গ্রামীণ ব্যাংকে হাত দেওয়াকে আমরা চরম অন্যায় বলে মনে করি। যে দেশে রাষ্ট্রায়ত্ত ব্যাংকগুলোতে অবাবস্থাপনা এবং হাজার হাজার কোটি টাকার লোপাট-দুর্নীতি চলে, সে দেশে গ্রামের অসহায় মানুষদের ব্যাংকটিকে রাষ্ট্রায়ত্ত করার প্রচেষ্টা আমাদের শঙ্কিত করে।


যে দেশের ৫০ ভাগ মানুষের বয়স ২৩ বা তার চেয়ে কম, যে বিশাল তরুণ প্রজন্ম কর্মক্ষেত্রের জন্য নিজেদের প্রস্তুত করছে, যাদেরকে ঠিকভাবে গড়ে তুলতে পারলে দ্রুত দেশের চেহারা পাল্টে যাবে – সেই দেশে আজ উন্নয়নের রাজনীতি খুব বেশি জরুরী।


আরও

"... by dividing up and splitting up the Grameen Bank in 19 pieces only – you’ll destroy the bank. If somebody wants to destroy the bank, that’s the best way to do this – cut it up, chop it off and it’s gone."

৮৪ লক্ষ ঋণগ্রহীতার প্রতিষ্ঠানকে ভেঙে ১৯ টুকরা করার প্রচেষ্টা - আমরা হাসব নাকি কাঁদব!



"Making money is a happiness. Making other people happy is a superhappiness."

“Within two years, more than 25,000 beggars stopped begging completely. Because they become such a successful door-to-door salesperson."

“So you see, you give people a chance, they bring out their own ability. So that’s the message here.”

Muhammad Yunus And 'A Cinderella Moment' At The Forbes Philanthropy Summit - Forbes



"গ্রামীণ ব্যাংক গরিব মহিলাদের নিজস্ব অর্থে গড়া সম্পদ। যে প্রতিষ্ঠানের ৯৭ শতাংশ মালিকানা গরিব মহিলাদের হাতে, সেখানে তদন্ত কমিশন কীভাবে প্রস্তাব করে যে এটার বৃহত্তর মালিকানা সরকারকে দিয়ে দিতে হবে। গরিব মানুষের মালিকানাকে গায়ের জোরে কেড়ে নেওয়ার প্রস্তাব দেওয়া হচ্ছে কেন?

যে ব্যাংক নাগরিকদের নিজের টাকায় চলে সেখানে সরকারকে কেন ৫১ শতাংশ বা তারও বেশি মালিকানা দিতে হবে এবং সরকারের আজ্ঞাবহদের হাতে এই ব্যাংক পরিচালনার (তথা লুটপাটের) ব্যবস্থা করে দিতে হবে, এর ব্যাখ্যা কি কমিশন জাতির সামনে উপস্থাপন করবে?

এই ব্যাংক সরকারের কাছ থেকে কোনো টাকা নেয় না, কোনো দাতা সংস্থা থেকেও টাকা নেয় না। এটা সম্পূর্ণরূপে স্বনির্ভর প্রতিষ্ঠান। এটা গরিব মহিলাদের মালিকানায় এবং তাদেরই পরিচালনায় একটি ব্যাংক।

গ্রামীণ ব্যাংক চিরজীবী হোক। গরিব মহিলাদের ক্ষমতা চিরস্থায়ীভাবে প্রতিষ্ঠিত হোক।"

দেশের মানুষ গ্রামীণ ব্যাংককে ছিনিয়ে নিতে দেবে না

Friday, October 18, 2013

Looking back and connecting the dots

Sometimes, it seems amazing when you look back at time and try to connect the dots. I went to US last November (2011) with a newly found interest in Biology and Business

If I find a subject area or topic interesting, I usually try to learn as much as I can from books and the web. Then while reading, whenever I come across another topic that I find interesting, I start following the same procedure for the new topic of interest – serendipity in action!



I have always been fascinated by the prospects of improving health and brain power. Previously, my idea was to invent new technologies (e.g., stem cells, engineered organs etc.) for better health and more brain power. Books and ideas (e.g., human body version 2.0) of Ray Kurzweil always inspired me. 

My interest in Biology led me to books which helped me discover that both health and brain power can be improved dramatically by natural means. Reading those books, I became aware of the benefits that a sound health can bring into your life. I incorporated a lot of health practices to my life (a lot actually - aerobic exercises and strength training, mindfulness and deep breathing, lots of blueberries and strawberries and nuts and yogurt and a whole lot of other changes in my diet plus supplements, and I even started flossing!).

My interest in Business led me to an advice "Isolation is dangerous". So I made myself a lot more social than I was.

Then, being social and conversing with others, I found out that I could actually think a lot better than I thought I did and I was amazed.

I was amazed at how much I had managed to learn by myself. I have never had the opportunity of learning from very good teachers or very smart peers (excluding a few days during Math Olympiad back in 2005). I had no one to guide me. I learned to guide myself.

So when I came back to Bangladesh in March 2012, my inspired self returned to unsocial life spending time on nerdy stuffs!

Now, I am eagerly waiting to find out where my previous experiences take me next.




Life is never this simple. I have left out a lot of details. But this is surely an outline.


(Written sometime in May-June 2012; enhancements later)

অন্তর্বর্তীকালীন সরকারঃ কিছু প্রস্তাব

মাননীয় প্রধানমন্ত্রীর সর্বদলীয় অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের প্রস্তাবকে আমরা স্বাগত জানাই।


দেশে একটি অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের লক্ষ্যে কিছু প্রস্তাবঃ

1. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান হবেন সব দলের কাছে গ্রহণযোগ্য একজন। মাননীয় রাষ্ট্রপতি সব দলের পরামর্শ নিয়ে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান নিয়োগ দিবেন।

2. সংসদ ভেঙে দিতে হবে।

3. নির্বাচন কমিশন হতে হবে শক্তিশালী, স্বাধীন এবং সকল দলের কাছে গ্রহণযোগ্য।

4. অন্তর্বর্তীকালীন সরকার প্রধান সকল দলের পরামর্শ নিয়ে ছোট কলেবরের অন্তর্বর্তীকালীন মন্ত্রীসভা (এবং মন্ত্রীসভাকে সহায়তা করতে উপদেষ্টা পরিষদ) গঠন করবেন।

5. প্রশাসন যাতে নিরপেক্ষ হয় এবং ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত এই নিরপেক্ষতা বজায় থাকে - অন্তর্বর্তীকালীন সরকার তা নিশ্চিত করবেন। কোন দল যাতে এক্ষেত্রে প্রভাব বিস্তার করতে না পারে সে লক্ষ্যে বাবস্থা নেবেন।

6. ক্ষমতা হস্তান্তর পর্যন্ত সব প্রক্রিয়া যাতে সংবিধান সম্মতভাবে হয় তা নিশ্চিত করতে হবে।

Thursday, October 17, 2013

Crime in Psycho-Social Context

Crime is doing something that harms others or doing something that hurts others or that might hurt others if they ever become aware. If someone harms another, then the harmed is also hurt, so “hurt” is more general but “hurt” is not a measurable quantity. (Related – the principle of karma) 


Why do people commit crime? 


Personal gain and revenge.

Suppose A feels that B has not obeyed the orders of A in a particular instance and that has hurt A. If A punishes B, then that action might include both: personal gain (subordinates get scared and follow A) and revenge. Psychopaths are an exceptional breed. They take pleasure in hurting others. Same thing happens to those who are obsessed with all their life events in which they have been mistreated. People also transfer anger / revenge from one person to another, from one situation to another. We find angry people showing anger (being unable to show anger to superiors or equals) to subordinates, family members who can’t defend themselves from the wrath of the angry person. Revenge can lead to other revenges. (A hurting B or A feeling that B has hurt him, then B taking revenge, then A taking revenge in return.)

Unhappiness, mistreat makes us revengeful. The world is not perfect. Almost everyone is mistreated (or more correctly, almost everyone “feels” that he / she is mistreated) someway someday – no one gets what he / she deserves everyday. But you can still be happy – external conditions don’t make you unhappy, it’s how you interpret your external conditions, what you expectations are, that make you feel happy / unhappy. If you don’t brood how you were mistreated, but instead think of how much fortunate you are in comparison to others and count on God’s blessings you can be happy. Unhappy, revengeful people get more easily inclined towards crime. We need more happy, fulfilled people and less unhappy people. 

Children from broken families don’t get the guidance, love they need in the initial stage. If they are mistreated, or if they feel that they are mistreated, they become revengeful. We need more of loving stronger families, more of stable marriages. Children need the guidance, love and economic support, which gets bolstered by joined efforts of both the parents. 

Like all other affairs of life, committing crime can also become a habit. (Thinking patterns are habit too.) Concentrating on a particular aspect of life e.g., how much everyone around makes a person suffer can also become his / her habit. Punishing / torturing others for anything someone doesn't like can also become a habit. (For behavior modification, finding out the “habits” that are the root cause of crime of a criminal could be one of the first steps.) So, if a child doesn't get guidance from the family, feels that he / she is mistreated, becomes revengeful, commits crime and if not taken into account, makes it a habit. – An example of how things might go awfully wrong gradually if unchecked.

The law enforcement agencies should include psychologists / psychiatrists / sociologists to look for abnormal, obsessive behavior among people in all walks of life. Technological solutions e.g., data mining, sentiment analysis, emotion detection etc. might help us in this regard. Lots of research and investigation into psychology, psychiatry, sociology would shed more light. Abnormalities can be brought back to normal (by applying principles and practices from Psychology, Psychiatry, Religious Principles / Eastern philosophies) before things get worse. 

People want to feel good about themselves and they want others (especially people they care about) to feel good about themselves. It is so much more satisfying when you feel that you have earned something yourself. And if you love others deeply, help others earnestly, try to make others happier, you receive love, respect, help in return. This is the greatest reward a man / woman can have. (Look around you. People who are loved by others are usually very nice people, at least better than others that make them stand out.) Whenever you feel an irresistible urge to do something that might hurt others / do harm to others someway someday, remind yourself again and again that someday all your sins would be public, and imagine - feel the shame, hatred (in others’ minds), imagine - feel how people you care about would react / feel. It will help you resist the urge / temptation. (Have you ever had this experience? Feeling of shame, guilt etc.? Always keep it in mind. Has anyone praised you for doing something good (that made you feel really happy)? Keep it in mind too. Make the experiences and the associated feelings guide you. But don’t brood too much in the past. Just help it guide you. You can’t change your past, but you can “always” make the future beautiful.) Imagine-feel how life could have been if you didn't have some of the things, some of the blessings you have. Now, feel happy and express gratitude. Sincerely believe that whatever you want in life can be achieved without hurting others / doing harm to others. You can even go one step further and begin to shape your desires so that the outcome is desirable to others. Then you can pull off together with others’ help, with greater force than if you were alone! Imagine a life full of mutual love and respect with people you care about! Find love! (It’s not just our romantic partners that we want to feel good about ourselves. We want our parents {Parents start off the process. During our childhood, when they say “Never do it”, we refrain from it and when they encourage us, we make it a habit.}, children, respected people, nice people, relatives and others to feel good about ourselves.) Your loved ones will inspire you!

In a society where people from all walks of life are treated equal and can pursue the life of their dreams, where law and order is strictly maintained, where everyone is held accountable for their deeds, people won’t hurt / harm others for personal gain and people would rely on law enforcement authority for judgment instead of taking revenge. Moreover, in a society where anyone can become anyone he / she wants to be, people are happier, more satisfied and more fulfilled and happier people are more empathetic, compassionate - people who care not only about themselves but also others.

Wednesday, October 16, 2013

Measuring Intelligence: Pitfalls and Fallacies

“Top performing IT professionals outperform their peers not by a factor of 2 times or 10 times or even 100 times, but by 10,000 times.”
– Nathan Myhrvold, former Chief Technology Officer at Microsoft [1]


The currently accepted IQ scale does not seem reasonable if we look a little bit more closely

The scale measures intelligence in terms of age. An IQ of 150 indicates a 10 year old boy’s general intelligence is equal to the general intelligence of a 15 year old boy. People have a life expectancy of around 70. So there is an upper limit to how much intelligent a person can be! Beyond that, we are sorry, intelligence is not measurable! If we continue with this line of argument, then the whole process of going through the works of geniuses and labeling them with some IQ score is questionable.  

Here is an excerpt I found in one of my books:
Good programmers are up to 28 times better than mediocre programmers, according to individual differences research. Given that their pay is never commensurate, they are the biggest bargains in the software field.—Robert Glass (Fact 2 of Facts and Fallacies of Software Engineering [2002])

Is this claim reasonable? Let’s think.

A genius can't be just 1.5 times or 2 times better in performance (and worse yet, only compared to his / her age!) as the IQ scale shows. Reading speed can vary 3, 4 (or more) times. Learning capability can vary several times. Someone who knows how to organize the newly learned knowledge and store it as a model by modifying and augmenting his previous knowledge (More background knowledge leads to more understanding which leads to more effective learning.) can learn several times quicker. Intellectuals are persons who by definition enjoy intellectually satisfying tasks. So they naturally spend a lot more time on learning and applying knowledge than others. They have more background knowledge which makes it easier for them to learn new concepts faster and go deeper. 

If we want to measure someone’s general intelligence, numeric measures representing skills should be multiplied. Someone with 2 times the reading speed and 2 times the learning abilities of me, who spends 2 times more time on studying and who has 5 times more background knowledge than me which makes him 2 times more effective at learning newer concepts, should be able to learn 2*2*2*2 = 16 times more than me in a time frame of, say, several days. 

Next comes the question of applying the learned knowledge. Problem solving capability varies greatly, though there is no standard way of measuring problem solving capability. We can look at different problem solving competitions held regularly. If one problem at a certain competition can be solved by 200 contestants  a second problem by 20 and a third problem by only 2, then we can reasonably conclude that the third problem is at least 10 times or more (maybe 100 times) as hard as the first problem. In this case those 2 solvers are at least 10 times better than those who could only solve the easiest one. Whoa! Now, who doesn't want to become a genius given it’s true that one can become a genius if he / she is willing to put the required efforts?

Sometimes we underestimate geniuses. A genius can make mistakes in a field in which he / she doesn't have much interest and / or knowledge. He / she might perform poorly under mental pressure / tension / inattentiveness as mental pressure and tension can take up parts of his / her working memory (which acts as the temporary memory for holding intermediate steps during problem solving) which is probably one of the most crucial factors in abilities that are tested in IQ. Among many other faulty judgments we make, one is what I call superset-subset faulty judgement: we believe that if X is more knowledgeable than Y in subject S, then knowledge of X in subject S is a superset of Y, which is rare as the breadth and depth of knowledge in almost any subject area is so huge that its impossible for a single person to know everything in a subject. So knowledge of one person is rarely the superset of knowledge of another person in a particular subject.

There are other factors like Emotional Intelligence, Personality traits (e.g., perseverance) that play equal or more important role in success. Someone who is 10 times more intelligent than another person, and 2 times better at handling stress, plus 2 times more goal directed, focused and well planned, overall might be 10*2*2 = 40 times more effective.

So it seems reasonable to conclude that an intellectually gifted person might probably be 10 to 50 (or maybe more) times better performer in intellectual tasks combined than the average. So next time you meet an intellectually gifted person, don’t forget to show some respect! 


References

  1. The Human Side of IT

Win-win: Law of Attraction applied to collective

Law of attraction applied to individual

According to the law of attraction, if someone wants something deeply enough, visualizes and feels it, then the universe creates opportunities so that he / she can turn it into reality. To many, this might be just another “New Age” nonsense. 

But is it? 

All the religions teach us to pray to God for the changes we want to see, for the wishes we want to be fulfilled. We see Muslims praying with their hands stretched and many crying (deeply feeling) to God. In the Holy Bible, we find "Ask and it will be given to you; seek and you will find; knock and the door will be opened to you.” - Matthew 7:7. 

And when we try to understand people all around us including ourselves, we see everyone of us daydreaming a world where our deepest wishes have come true. We “visualize”, we “feel”, we create our own world. 

And what happens when we want something deeply enough? 

We begin to notice more of the opportunities that come our way, that were always there but unnoticed – but that’s just the logical side of it. Many of us have also had the experience of sudden deep wish fulfillment. If it is really the case, then God’s laws might be more general than what many of us think they are – not just limited to believers of a particular religion, not just limited to a particular way of doing things, but for everyone of us and in general more general. (The generic nature of prayer / wish follows if we accept that God knows everything that goes on inside our minds.) 

It’s worth mentioning that, we can pray and wish only for opportunities. We have to take necessary actions to make the best use of the opportunities that are presented to us.


Law of attraction applied to collective

Now let us suppose that the law of attraction is indeed true. 

Suppose two persons “A” and “B” want “X” (whatever it is), – but only one of them can have it. If “A” has it, then “B” loses it and vice versa. Then the universe has to decide what to do. But suppose both “A” and “B” want “X” and both of them can have it at the same time. Then there will be more chances of their common wish “X” coming true. (Imagine, 2 persons pulling a cart instead of one alone.) Now imagine a group of people praying deeply for something that is good for the group as a whole. If the law of attraction holds true, then there will be more chances of fulfillment – in fact, the force should be several times stronger. (Imagine, 1 person pulling a cart versus a lot of persons pulling the same cart.) 

How can we utilize it? 

We can begin to shape our desires so that the outcome is desirable not only to us, but at the same time, to others. Then even if the law of attraction doesn't work automatically, we can still pull off together with greater force!

This is what Napoleon Hill meant when he mentioned “The master mind”.



My own belief is that, God designed the Universe in such a way that morally obliged people win the most and are happier and what is good for all is the best option for an individual. And that is what it is ought to be if we assume that a benevolent God designed the Universe.  

A Collection of My Favorite Quotes

Wisdom

"Know thyself." 

- Greek maxim

"Intellectuals solve problems, geniuses prevent them." 

- Albert Einstein



Open Independent Mind

“If your mind is empty, it is always ready for anything, it is open to everything. In the beginner's mind there are many possibilities, but in the expert's mind there are few. ” 

- Shunryu Suzuki

"Believe nothing. No matter where you read it, or who said it, even if I had said it, unless it agrees with your own reason and your common sense." 
- Buddha

“I do not want my house to be walled in on all sides and my windows to be stuffed. I want the cultures of all lands to be blown about my houses as freely as possible. But I refuse to be blown off my feet by any.” 
– Mahatma Gandhi

"Few are those who see with their own eyes and feel with their own hearts." 
- Albert Einstein

[A lot of conflicts arise between people who have closed dependent minds. They divide the world into black and white, right and wrong with nothing in between. They view their way as the only right one and others' as wrong ones. They never try to be themselves, instead following the path others have shown them without much consideration or reflection.

People in general categorize everything they see around them into different predefined categories. It helps them make quick decisions because they know what to do with a certain category. But how can we be so sure that the categories and the knowledge associated with each category, that our society and culture has taught us, is correct?]

[Open independent mind is also a necessary prerequisite for creativity.]




On Living


“It's the possibility of having a dream come true that makes life interesting.” 
- Paulo Coelho

"I have always wished that for myself...stay hungry, stay foolish." 
Steve Jobs




“Life begins at the end of your comfort zone.” 
- Neale Donald Walsch

"We are like newborn children,
Our power is the power to grow."
- Rabindranath Tagore


“If we did all the things we are capable of doing, we would literally astound ourselves." 
- Thomas A. Edison

"When one door of happiness closes, another opens; but often we look so long at the closed door that we do not see the one which has been opened for us.” 

― Helen Keller

[Being internally happy, satisfied and fulfilled and making others happier, more satisfied and more fulfilled is the most important goal in life. Worldly things, possessions, achievements are the tools for becoming happy, not the final goal in themselves.]

Immediately Jesus reached out his hand and caught him. "You of little faith," he said, "why did you doubt?" 

- Matthew 14:31.

[You have faith and confidence - you win. You have fear and doubts - you lose.]



On imagination

"Good, he did not have enough imagination to become a mathematician".

Hilbert's response upon hearing that one of his students had dropped out to study poetry.

[People commonly believe that poetry, arts and literature require us to have imaginative powers. But in truth, Mathematics, Science and Engineering require far more sophisticated imaginative powers.]

"Logic will get you from A to B. Imagination will take you everywhere." 

- Albert Einstein



On Our Ignorance



"Sixty years ago I knew everything; now I know nothing; education is a progressive discovery of our own ignorance." 

- Will Durant

"Everything that can be invented has been invented." - Charles Holland Duell, 1899. "Virtually nothing, and I mean this honestly, has been invented yet. We're just starting." 
- Woddy Norris, 2005.





"The universe is not only queerer than we imagine, but queerer than we can imagine."
- J. B. S. Haldane

"There are more things in heaven and earth, Horatio,
Than are dreamt of in your philosophy."
- William Shakespeare (Hamlet)



[What we know as science is only part of the ultimate reality.
The ultimate reality would be disclosed gradually in the future.]



Higher Philosophy


“I believe that everything happens for a reason. People change so that you can learn to let go, things go wrong so that you appreciate them when they're right, you believe lies so you eventually learn to trust no one but yourself, and sometimes good things fall apart so better things can fall together.” 
― Marilyn Monroe

[Many of the events seem to be part of different human-made plans. But there is an ultimate planner of the Universe. Nothing can go beyond His plans. God is the ultimate reason.]

"Ask and it will be given to you; seek and you will find; knock and the door will be opened to you." 

- Matthew 7:7



Being Smart

“I have no special talent. I am only passionately curious.” 

- Albert Einstein

“It’s not that I’m so smart, it’s just that I stay with problems longer.” 

- Albert Einstein

"If you can't explain it simply, you don't understand it well enough." 

- Albert Einstein



Being Great

“When ye are in the service of your fellow beings, ye are only in the service of your God”
- Mosiah 2:17

[Serving others is the best way to serve God.]

“Everybody can be great...because anybody can serve. You don't have to have a college degree to serve. You don't have to make your subject and verb agree to serve. You only need a heart full of grace. A soul generated by love.” 

 ― Martin Luther King Jr.

আদর্শ রাজনৈতিক দলের রূপরেখা

“স্বাধীনতার পর দেশের সমগ্র জনগোষ্ঠীকে এক করার, সবার পক্ষে কথা বলার, সবার হয়ে কাজ করার মতো কোনো দল আসেনি। সবাই নিজ নিজ স্বার্থে চলেছে, এখনো চলছে। যারা বাঙালিদের স্বার্থের কথা বলেছে, তারা পাহাড়িদের কথা ভুলে গেছে। যারা মুসলমানের স্বার্থ রক্ষার কথা বলেছে, তারা হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিষ্টানদের স্বার্থের কথা মনে রাখেনি। যারা জনগণতান্ত্রিক বিপ্লব করবে বলে বুলন্দ আওয়াজ তুলেছিল, তাদের চিন্তায়-কর্মেই জনগণের জায়গা ছিল না। আর সাধারণ মানুষের অবোধগম্য এসব অচেনা স্লোগান দিতে দিতে তারা একসময় জনগণ থেকে পুরোপুরি বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়।
ফলে বাংলাদেশে গরিব-দুঃখী মানুষের পক্ষে কথা বলার রাজনীতিটাই হারিয়ে গেল।
আসলে কোনো রাজনৈতিক দলই গোটা দেশকে ধারণ করতে পারছে না। তারা কেউ আওয়ামী লীগকে ধারণ করে, কেউ বিএনপিকে, কেউ বা জাতীয় পার্টি বা জামায়াতকে। সবাই গোষ্ঠীগত স্বার্থে মগ্ন। ব্যক্তিস্বার্থে মশগুল। ৪২ বছর ধরেই আমরা নীতি-আদর্শের চেয়ে ক্ষমতাকেই বড় করে দেখছি।
আমরা এমন একটি রাজনৈতিক দল চাই, যে দলটি সব ভেদাভেদ ভুলে বাংলাদেশের সব মানুষকে হেফাজত করবে। কারও নাগরিক অধিকার ও মানবাধিকার হরণ করবে না। ধর্ম ও জাতিগত পরিচয়ে কারও প্রতি বৈষম্য দেখাবে না। আইনের দৃষ্টিতে সবাই সমান সুযোগ ও অধিকার ভোগ করবে। যে দলটি আইনের শাসন ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠায় মনোযোগী হবে, এবং ব্যক্তি, দল ও গোষ্ঠীর ঊর্ধ্বে জাতীয় স্বার্থকে স্থান দেবে।
হেফাজতে ইসলাম বা অন্য কোনো ধর্ম নয়, কোনো বিশেষ জনগোষ্ঠী নয়, যে দলটি বাংলাদেশের সব মানুষের অধিকার ও স্বার্থ দেখবে, আমরা সেই দলের অপেক্ষায় আছি।“
সোহরাব হাসান | তারিখ: ১১-০৫-২০১৩ সুত্রঃ প্রথম আলো


আমরা যে আদর্শ রাজনৈতিক দলের স্বপ্ন দেখি সেই দলটি শুধু মিটিং – মিছিলের মাঝে নিজেদের কর্মকাণ্ড সীমাবদ্ধ রাখবে না, বরং সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে সবাইকে নিয়ে বিভিন্ন সামাজিক উদ্যোগ গ্রহণ করবে।

দলটি গ্রামের মানুষগুলোকে এক করে গ্রামের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসবে। কোন নির্দিষ্ট জাতি ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠী দল বা পেশার মানুষের উপর যাতে অন্যায় না হয়, সবাইকে নিয়ে তা নিশ্চিত করবে। যৌতুক, বাল্যবিবাহ এবং এসব থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, যেমন নারী নির্যাতন, এর বিরুদ্ধে সবাইকে নিয়ে সম্মিলিত অবস্থান নেবে।

তরুণ তরুণীদের মাঝে স্বপ্ন, উদ্যম, উৎসাহের কোন ঘাটতি নেই। ওরা পরাজয় খুব একটা দেখেনি – তাই পরাজয় খুব একটা মানতেও চায় না। ওরা পছন্দ করে একসাথে সময় কাটাতে। আদর্শ দলটি দেশের তরুন তরুণীদের অনুপ্রাণিত করবে, প্লাটফর্ম তৈরি করে দেবে যাতে ওরা দল বেঁধে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে সমস্যা সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়তে পারে – হতে পারে নিজেদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সমস্যা, হতে পারে নিজেদের এলাকার। কেউ হয়ত উদ্ভাবন করে বসবে এমন কিছু যা দিয়ে অনেক অনেক মানুষের জীবনের একটা দিক পুরোপুরি বদলে যাবে। আমাদের আধুনিক প্রযুক্তি নির্ভর তরুণ প্রজন্ম হয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইবে!

মানুষ চায় সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি। আদর্শ রাজনৈতিক দলটি এমন সব প্লাটফর্ম গড়ে তুলবে যাতে মানুষ নিজের এবং দেশ ও সমাজের কল্যাণের মাধ্যমে সামাজিক মর্যাদা ও স্বীকৃতি অর্জন করতে পারে।

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন উদ্যোগ এর সমন্বয় করবে, দেশের বিভিন্ন সমস্যার নতুন নতুন সমাধান বের করে বাস্তবায়ন করবে, জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক শ্রেণীপেশার মানুষের স্বার্থ যাতে সংরক্ষিত হয় তা গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবার মতামতের ভিত্তিতে নিশ্চিত করবে।

অযোগ্য সুবিধাভোগী, অন্যায়কারীরা সংখ্যায় মুষ্টিমেয়। জনগণের ঐক্যের সামনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা তাদের নেই। আদর্শ রাজনৈতিক দলটি জনগণকে নিয়ে সকল অন্যায় – অবিচারের বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান নেবে।

আদর্শ রাজনৈতিক দল নেতা কেন্দ্রিক দল হবে না, আদর্শ দল হবে জনগণের দল। আদর্শ দলের নেতারা জানেন, জনগণের পাশে দাঁড়ালে, জনগণের আশা আকাঙ্ক্ষা বোঝার চেষ্টা করলে এবং সেই লক্ষ্যে কাজ করলে, জনগণও তাদের পাশে থাকবে।

দলের শীর্ষ পদসহ প্রতিটি পদে নিয়োগ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্ধারিত হবে। এতে যোগ্য বাক্তিদের বিজয় নিশ্চিত হবে। গণতান্ত্রিকতা চর্চার অংশ হিসেবে গুরুত্বপূর্ণ সিধান্ত নিতে দুই- তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতার বিধান রাখা যেতে পারে, আর দুই-তৃতীয়াংশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা না থাকলে সভাপতির সিধান্ত গৃহীত হতে পারে। দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী সমর্থক এবং তাদের মতামত হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ। স্থানীয় থেকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক - দলের প্রতিটি পর্যায়ে একক কর্তৃত্বের বদলে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। আর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকলে নিশ্চিত হবে জবাবদিহিতা। প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনেও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রাধান্য পাবে। জনগণের আস্থা, জনগণের মন জয় করে দলের নেতা কর্মীরা প্রার্থিতা নিশ্চিত করবেন।

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি যেহেতু গণতান্ত্রিকতার চর্চা করবে, সবার মতামতের ভিত্তিতে কাজ করবে, কাজেই দলীয় পদের জন্য নয়, বরং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ থাকবেন।

আদর্শ রাজনৈতিক দলটিকে আমরা সংসদ নির্বাচনেও দেখবো নতুন ভুমিকায়। প্রত্যেক এলাকার সাংসদ প্রার্থীরা মনোযোগ দিবেন দক্ষতা আর সৃজনশীলতা আর সততার সাথে সবাইকে নিয়ে নিজ নিজ এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে। তারা হবেন জনগণের নন্দিত নেতা। তারা জানেন, সবচেয়ে বেশি স্থায়ী এবং গুরুত্বপূর্ণ হল জনগণের হৃদয়ে স্থান। নির্বাচনী ক্যাম্পেইন পরিকল্পনায় তারা সৃজনশীলতা দেখাবেন। নিজেদের বিজয় তারা নিশ্চিত করবেন মেধার মাধ্যমে। সাংসদ পদ প্রার্থীরা জরিপ করে জনগনের মন বোঝার চেষ্টা করবেন এবং সেই অনুযায়ী মন জয়ের চেষ্টা করবেন। তারা শুধু নিজেদের বক্তব্য জনগণকে শোনাবেন না, বরং তাদের আগ্রহ বেশি থাকবে জনগণের বক্তব্য, আশা আকাঙ্ক্ষা, সমস্যা শোনায় এবং সেইসব আশা আকাঙ্ক্ষা, সমস্যা বাস্তবায়নে বাস্তব কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণে। তারা জনগণের গঠনমূলক সমালোচনাকে ইতিবাচক দৃষ্টিভঙ্গিতে গ্রহণ করে নিজেদের ভুলভ্রান্তি দূর করে কর্মকাণ্ড আরও উন্নততর করার কাজে ব্যবহার করবেন।

যারা নির্বাচনে মনোনয়ন পাবেন না তারা মন খারাপ করবেন না, নিজেদের “মনোনয়ন বঞ্চিত” ভাববেন না। বরং দলের সহায়তায় বিভিন্ন প্রশংসনীয় সামাজিক উদ্যোগ নিয়ে দেশ গঠনে অবদান রাখবেন এবং দল ও জনগণ তাদের স্বীকৃতি, সম্মান দেবেন। জনপ্রিয়তার দৌড়ে, যোগ্যতায় একাধিক প্রার্থী কাছাকাছি হলে জরিপের মাধ্যমে প্রার্থী চূড়ান্ত হবে। জাতীয় স্বার্থে, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে সবাই একতাবদ্ধ।

আমাদের দেশের এক দল অপর দলের বিরুদ্ধে অপপ্রচার চালায় এবং এর জবাব দেওয়া হয় পাল্টা অপপ্রচারের মাধ্যমে। কিন্তু দলটি এই অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে এসে যুক্তি দিয়ে, তথ্য প্রমাণ দিয়ে অপপ্রচারকে মিথ্যা প্রমাণিত করবে এবং সচেতন জনগণ মিথ্যা অপপ্রচারের সংস্কৃতিকে ঘৃণার চোখে দেখবে। জনগণের দলটি অপরকে দোষারোপ করে সময় নষ্ট না করে দেশ ও দশের কল্যাণে আত্মনিয়োগ করবে।


আদর্শ রাজনৈতিক দলটির প্রচার প্রসার শুধুমাত্র মিটিং মিছিলের মাধ্যমে হবে না, শুধুমাত্র নেতা থেকে জনগণের মাধ্যমে হবে না, বরং দেশের আপামর জনসাধারণের মাধ্যমেই অর্থাৎ একজনের মাধ্যমে আরেকজনের কাছে ছড়িয়ে পড়বে। যারা দলটির মূলনীতি, কার্যকলাপ এসবের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করবেন, তারাই স্বতঃস্ফূর্তভাবে কাছের মানুষদের অবহিত করবেন এবং এভাবেই দলটি জনগণের হৃদয়ে স্থান করে নেবে।


আদর্শ রাজনৈতিক দল যাদের সমর্থন পাবে

1. তরুন প্রজন্ম, যারা নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন দেখে
2. গ্রামের গরিব দুঃখী অসহায় মানুষ, যাদের হয়ে কথা বলার মত কেউ নেই
3. বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের শ্রমিক, ন্যূনতম অধিকার থেকে যারা বঞ্চিত
4. সৎ বাবসায়ি, যাদের বাবসার বিকাশ অনুন্নত অবকাঠামো, অপ্রতুল জ্বালানি সরবরাহ, অপরাজনীতি, দুর্নীতির কারণে বাধাগ্রস্থ হচ্ছে
5. বিভিন্ন পেশার যোগ্যতর বেক্তিরা, রাজনৈতিক সুবিধাভোগী অযোগ্যদের তুলনায় যারা অন্যায়ভাবে পিছিয়ে পড়ে
6. বিভিন্ন ধর্ম, বিভিন্ন গোষ্ঠীর মানুষ, নিজের দেশে যারা নিজেদের নিরাপত্তা নিয়ে উদ্বিগ্ন থাকতে বাধ্য হয়
7. সৎ বিনিয়োগকারী, শেয়ার বাজারে গুটিকয়েক দুর্নীতিবাজের কারসাজির কাছে পরাজিত হয়ে যারা সর্বস্ব হারিয়েছেন
8. দেশপ্রেমিক সচেতন নাগরিক, দেশের সম্পদ রক্ষায়, দেশের বৃহত্তর কল্যাণে কাজ করতে যারা বদ্ধপরিকর

আদর্শ রাজনৈতিক দল খরচ চালানোর জন্য সৃজনশীল উপায় উদ্ভাবন করতে পারে। দলের সক্ষম সমর্থকদের বিনিয়োগে সামাজিক এন্টারপ্রাইস প্রতিষ্ঠিত হতে পারে, যার অর্থ সমাজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে প্রতিষ্ঠিত বাবসায় বিনিয়োগ করা হবে এবং লভ্যাংশ দিয়ে দলের খরচ, মনোনীত প্রার্থীদের নির্বাচনী বায় বহন করা হবে। এমন বাবস্থায় সৎ, মেধাবী, যোগ্যতর প্রার্থীরা কালো টাকার মালিকদের পরাজিত করে সরকার গঠন করে দেশের উন্নয়নে অবদান রাখবেন।


প্রত্যেক মানুষের কিছু মূলনীতি, আদর্শ থাকে।

প্রত্যেক দলে কিছু মূলনীতি, কিছু আদর্শের ভিত্তিতে, কিছু লক্ষ্য বাস্তবায়নে মানুষ ঐক্যবদ্ধ হন।

সবার মতামতের ভিত্তিতেই প্রতিষ্ঠিত হবে আদর্শ দল – প্রত্যেকে নিজ নিজ মতামত উপস্থাপন করবেন এবং সম্মিলিতভাবে সিধান্ত নেওয়া হবে। ভিন্ন মত, মতভেদ থাকতেই পারে – যুক্তি তর্কের মাধ্যমে সবাই মিলে দলের গঠনতন্ত্র অনুসারে প্রতিটি মতভেদ সমাধান করবেন।

ভ্রাতৃত্বের বন্ধনে আবদ্ধ হয়ে স্বপ্নের বংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে সবাই একসাথে বসে সিদ্ধান্ত নেওয়া  - এই সুযোগটি কি কেউ হারাতে চাইবেন?

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি সমগ্র বাংলাদেশের চেতনাকে ধারণ করবে। বিভিন্ন মূলনীতি, বিভিন্ন আদর্শকে আত্তীকরণ করবে এবং সকলের মতামতের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সাধারণ কিছু মূলনীতির ভিত্তিতে নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ হবেন।

আদর্শ রাজনৈতিক দলের মূলনীতিতে যেসব বিষয় থাকতে পারেঃ

1. সবকিছুর উপরে জাতীয় স্বার্থ, নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে সবাই ঐক্যবদ্ধ
2. মুক্তিযুদ্ধের চেতনা
3. জাতি ধর্ম বর্ণ শ্রেণী পেশা নির্বিশেষে সবার একতা, সবার স্বার্থ সংরক্ষণ
4. গণতন্ত্রমনা – দলের প্রতিটি কর্মকাণ্ডে জনগণের মতামত, আশা আকাঙ্ক্ষা প্রতিফলিত হবে, জবাবদিহিতা নিশ্চিত করা হবে
5. সকল অন্যায়, অপকর্ম, অত্যাচার, দুর্নীতির বিরুদ্ধে দৃঢ় অবস্থান

আদর্শ রাজনৈতিক দলটি বাংলাদেশের সব রাজনৈতিক দলকে নতুন রাজনীতির পথে অনুপ্রাণিত করবে। 


সবকিছুর উপরে আমরা চাই, জাতীয় স্বার্থে এবং নতুন বাংলাদেশের স্বপ্নে রাজনীতিতে গুনগত এবং স্থায়ী পরিবর্তন।

ধর্মীয় শিক্ষাঃ ধর্ম এবং শিক্ষা

বাংলাদেশে ধর্মীয় শিক্ষায় সুশিক্ষিত বলতে আমরা অনেকে শুধুমাত্র মাদ্রাসা শিক্ষায় শিক্ষিতদের বুঝি। বাক্তিগতভাবে আমি শিক্ষা এবং ধর্ম দুটোকেই অনেক ব্যাপক অর্থে ব্যবহার করি। বিল গেটস এবং মার্ক যাকারবারগ ব্যাচেলরস ডিগ্রি শেষ করার আগেই মাইক্রোসফট এবং ফেইসবুক প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আইনস্টাইন প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় নিজেকে সেভাবে মেলে ধরেননি, ১০৯৩টি পেটেন্টের অধিকারী টমাস আলভা এডিসন স্কুলেই বেশিদিন যাননি – শিক্ষাকে প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষায় সীমাবদ্ধ রাখাটা যে একেবারেই অনুচিত - তার জন্য এগুলোর চেয়ে ভাল উদাহরণ আর কি হতে পারে? রবীন্দ্রনাথ আমাদের শিখিয়েছেন প্রকৃতি থেকে শিখতে “সুশিক্ষিত মাত্রই স্বশিক্ষিত” – প্রমথ চৌধুরীর এই উক্তিটি একটা গভীর সত্যকে ধারন করে – সুশিক্ষিত বেক্তিরা নিজেদের বিচার বিশ্লেষণ দিয়ে নিজেদের মত করে নতুন জ্ঞান আহরন করেন আর আমরা একটু ভালমত পড়লে জানবো – অসহযোগ আন্দোলনের নেতা মহাত্মা গান্ধী যিনি গীতা এবং বিভিন্ন ধর্মের গ্রন্থ পড়ে অনুপ্রাণিত হয়েছিলেন, তিনি প্রচলিত একটি নির্দিষ্ট ধর্মে নিজেকে সীমাবদ্ধ রাখেননি ঈশ্বর এবং মহাবিশ্ব সম্পর্কে তার নিজস্ব কিছু বিশ্বাস ছিল এবং তিনি নিজেকে শুধু এইসব বিশ্বাসে সীমাবদ্ধ রাখেননি - নিজের জীবন গড়ে তুলেছিলেন নিজস্ব বিশ্বাস অনুসারে – তাকে কি আমরা ধর্মীয় শিক্ষায় সুশিক্ষিত আলোকিত মানুষ বলব না? (“I do not want my house to be walled in on all sides and my windows to be stuffed. I want the cultures of all lands to be blown about my houses as freely as possible. But I refuse to be blown off my feet by any.” – Mahatma Gandhi)

বাংলাদেশের রাজনীতিঃ যে বাবস্থার আমরা পরিবর্তন চাই

গত দুই দশক ধরে আমরা দেখেছি গণতান্ত্রিক বাংলাদেশের মানুষ পাঁচ বছর পর পর একদিন গণতন্ত্র ফিরে পায় এবং সেদিন ভোট দিয়ে একটি দলের হাতে ক্ষমতা তুলে দেয় আর সেই দলটি পরবর্তী পাঁচ বছর নিজেদের তন্ত্র কায়েম করে!

সরকারি দল সংসদের নিয়ন্ত্রণে থাকে আর বিরোধী দল সংসদ বর্জন করে। সরকারি দল আইন পাশ করে আর বিরোধী দল সংসদে কথা না বলে হরতাল ডাকে, জনগণের জানমালের ক্ষতি করে। সংবিধানের মাধ্যমে সাংসদদের দলীয় সিধান্তের বাইরে কথা বলার অধিকার পর্যন্ত কেড়ে নেওয়া হয়েছে।

সংসদীয় সরকার বাবস্থায় এই সাংসদদের মাঝ থেকেই ৯০ ভাগের উপরে মন্ত্রী নির্বাচিত হন।

শুধুমাত্র আইন বিভাগ আর শাসন বিভাগ না, বিচার বিভাগেও আমরা দেখি ব্যাপক দলীয়করণ – এই কোর্ট অমুক দলের, ঐ কোর্ট তমুক দলের। তার উপর যখন দেখা যায় আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সাংসদ, মন্ত্রী আর সরকারি দলের নেতাদের নির্দেশের বাইরে যেতে পারেন না (গেলে চাকরি “খেয়ে” ফেলতে পারেন!), তখন পরিস্থিতি কিরকম ভয়ানক তা সহজেই অনুমেয়। আমরা দুইয়ে দুইয়ে চার মেলালে বুঝবো – সরকারি দল চাইলেই যে কাউকে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর মাধ্যমে ধরে নিজেদের “কোর্টে” বিচারের বাবস্থা করতে পারে। আর সরকারি দলের সাংসদরা হয়ে যান আইন শৃঙ্খলার উরধে।

কেন্দ্রীয় সরকারের এমন অবস্থার পর যখন দেখা যায় স্থানীয় সরকার বাবস্থাও অত্যন্ত দুর্বল - তখন গ্রামের অসহায় দরিদ্র মানুষগুলোকে নিয়ে ভাবার মত কেউ থাকে না।

দুর্নীতি দমন কমিশন আর নির্বাচন কমিশনের পূর্ণ স্বাধীনতা নেই এবং তারচেয়েও বড় কথা যতটুকু আছে তারও প্রয়োগ নেই। আইন শৃঙ্খলার উরধে থাকা সাংসদ, নেতাদের কারও রয়েছে নিজস্ব নির্যাতন সেল, কারও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কোটি কোটি টাকা, কেউ কেউ খুনের মামলা নিয়ে দিব্যি (অপ)রাজনীতি করা অব্যাহত রাখেন। (ত্বকীর মত সোনার টুকরা ছেলেকে এদেশে খুন হতে হয়।) তারা দুর্নীতি করে কাউকে অবৈধ সুবিধা দিলে কারও কিছু বলার থাকে না।

অবৈধ সুবিধাগুলো নেওয়ার জন্য আমরা দেখি সরকারি দলের যুব এবং ছাত্র সংগঠনগুলোর অপতৎপরতা। সবার চোখের সামনেই তারা অস্ত্র নিয়ে ঘোরাফেরা করে। চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি তাদের লক্ষ্য। একটু ভালমত খবর নিলে আমরা জানতে পারি, ছাত্র সংগঠনগুলোর অনেক নেতাই সত্যিকারের ছাত্র নন – কেউ কেউ ঠিক ছাত্র নন, তবে ছাত্রের বাবা!

৫ বছর শেষে যখন নির্বাচনের সময় আসে তখন প্রধান দলগুলোতে বসে মনোনয়ন বিক্রির নিলাম হাট। এই হাট এ যিনি সবচেয়ে বেশি দর হাঁকতে পারেন তিনি নিলামে জয়ী হন। চাঁদাবাজি, খেলাপি ঋণের টাকা দিয়ে তিনি মনোনয়ন কেনেন এবং সেই কালো টাকা বাবহার করে নির্বাচনে জয়ী হয়ে আসেন। ৫ বছর সরকারি দলের দুঃশাসনে অতিষ্ঠ জনগণ বিরোধী দলকে ক্ষমতা দেয় এবং সেই বিরোধী দল আবার ৫ বছরের জন্য গনতন্ত্রের নামে নিজেদের “তন্ত্র” কায়েম করে। আবারও শুরু হয় একই খেলা - পার্থক্য শুধু এবার সরকারি দল বিরোধী দলের ভূমিকায়, বিরোধী দল সরকারি দলের ভূমিকায়।

আমরা বাংলাদেশের সাধারণ জনগণ এই বাবস্থার পরিবর্তন চাই।

নির্বাচনকালীন সরকারবাবস্থা নিয়ে অবস্থানঃ সহিংসতার বিপক্ষে, শান্তির পক্ষে

নির্বাচনকালীন সরকারবাবস্থা নিয়ে সরকার এবং প্রধান বিরোধী দলের মুখোমুখি অবস্থানে দেশবাসী আতঙ্কিত। ২৫ অক্টোবর এবং তার পরবর্তী দিনগুলোতে কর্মসূচি নিয়ে সরকার এবং প্রধান বিরোধী - উভয় দলের নেতারা আগ্রাসী বক্তব্য (“লগি - বৈঠা” এর বিপরীতে “দা - কুড়াল”) দিচ্ছেন। দেশের জনগণ চায় তাদের ভোটের অধিকার সুষ্ঠুভাবে প্রয়োগ করতে। কিন্তু তার জন্য জনগণের জানমালের ক্ষতি হোক – এটাও কেউ চায় না।  

সরকারি এবং বিরোধী দলগুলো নিজ নিজ দাবির পক্ষে গনসচেতনতা সৃষ্টি করতে পারে, শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালন করতে পারে। কিন্তু কোন দল জনগণের জানমালের ক্ষতি করলে জনগণ তাদেরকে প্রত্যাখ্যান করবে। অন্যদিকে, বিরোধী দলগুলোকে শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি পালনের সুযোগ না দিলে, সরকার অবাধ, সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে - সেই প্রতিশ্রুতি গ্রহণযোগ্যতা হারাবে। 


সরকার এবং বিরোধী উভয়দলের নেতারা ক্ষমতার লোভে জনগণকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেবেন – কোন সচেতন নাগরিক তা মেনে নিতে পারেন না।

আমরা অতীতে দেখেছি দেশের ক্রান্তিলগ্নে জনগণের দায়িত্বপূর্ণ ভূমিকা।

আজ আরও একবার সময় এসেছে দেশের আপামর জনসাধারণের ঐক্যের।

সচেতন নাগরিক সমাজ সম্মিলিতভাবে সবরকম সহিংস কর্মসূচি প্রত্যাখ্যান করবেন, জনগণের মাঝে সচেতনতা সৃষ্টি করবেন এবং সহিংস কর্মসূচির বিরুদ্ধে শান্তিপূর্ণ অবস্থান নেবেন – এই অবস্থান কোন দলের পক্ষে বা বিপক্ষে নয়, এই অবস্থান সহিংস কর্মসূচির বিরুদ্ধে, দেশের জনগণের জানমালের ক্ষতির বিরুদ্ধে, এই অবস্থান শান্তির পক্ষে।

নির্বাচনকালীন সরকারবাবস্থাঃ জনগণের মতামত প্রতিফলিত হোক

আগামী নির্বাচন কবে হবে, কিভাবে হবে – এটা সাম্প্রতিককালে দেশের রাজনীতিতে সবচেয়ে বড় আলোচনার বিষয়। সরকারি দল চাইছে নিজেদের অধীনে নির্বাচন। বিভিন্ন দল থেকে নির্দলীয় সরকারের দাবি উঠেছে। আবার জনমত জরিপে দেখা যাচ্ছে দেশের অধিকাংশ জনগণ নির্দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচনের পক্ষে।

দেশের রাজনৈতিক সংস্কৃতি বিবেচনা করলে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে - অন্তর্বর্তী সরকারটি যদি বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিদের নিয়েও গঠিত হয় তবে কি বিভিন্ন দলের প্রতিনিধিরা প্রশাসনকে নিজেদের মত করে সাজাতে চাইবেন না এবং এক্ষেত্রে প্রশাসন সাজানো নিয়ে বিরোধ কি অনিবার্য না?

তবে নির্দলীয় সরকারের দাবিতে দেশে অতীতের মত গোলযোগ, নৈরাজ্য, বিশৃঙ্খলা হোক, অর্থনীতির ক্ষতি হোক – এটাও সাধারণ জনগণ চায় না।

দেশের আপামর জনসাধারণ সমস্যাটির একটি গ্রহণযোগ্য সমাধান দেখতে চায়।
দেশের সংখ্যাগরিষ্ঠ মানুষ যদি নির্বাচনকালীন সরকার হিসেবে বর্তমান সরকারের উপর আস্থা রাখে – তবে সেটিই হবে গ্রহণযোগ্য সমাধান। অন্যদিকে, সরকারের ভেতরে এবং বাইরে থাকা বিভিন্ন দল যারা নির্দলীয় সরকারের পক্ষে, তারা প্রতি আসনে স্বাক্ষর সংগ্রহের মাধ্যমে প্রমাণ করতে পারে দলীয় সরকারের অধীনে নির্বাচন হলে এবং বিরোধী দল নির্বাচনে না গেলে ৫০ ভাগের উপরে মানুষ ভোট দিতে ভোট কেন্দ্রে যাবে না। দেশের জনগণ যদি নির্দলীয় সরকারকেই তাদের ভোটের অধিকার রক্ষার তথা সুষ্ঠু নির্বাচনের একমাত্র উপায় বলে মনে করে তবে নিজেরাও এই উদ্যোগ নিতে পারে। আর দেশের ৫০ ভাগের উপর মানুষ যদি ভোটকেন্দ্রেই না যায়, তবে কি সরকারি দলের নিজেদের অধীনে নির্বাচন অনুষ্ঠানের নৈতিক অধিকার থাকবে? সেই নির্বাচনের কোন গ্রহণযোগ্যতা থাকবে না, সেই নির্বাচনের মাধ্যমে প্রতিষ্ঠিত সরকার স্থায়ী হবে না এবং জনগণও চাইবে না জনগণের অর্থে বিপুল বায়বহুল একটি অগ্রহণযোগ্য নির্বাচন হোক।

নতুন বাংলাদেশের স্বপ্ন

বাংলাদেশের মানুষ পরিবর্তন চায়। কিন্তু স্থায়ী পরিবর্তনের জন্য মানুষের মধ্যে দিয়েই পরিবর্তনটা আসতে হবে।

মানুষ কিভাবে পরিবর্তন আনবে?

গ্রামের মানুষগুলো এক হয়ে কি গ্রামের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানে এগিয়ে আসতে পারে না? যেসব যুবক আড্ডা দিয়ে সময় কাটাত, তারা কি চাইলেই পারে না এক হয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে সবার চোখে “হিরো” হয়ে উঠতে? কোন নির্দিষ্ট জাতি ধর্ম বর্ণ গোষ্ঠী দল বা পেশার মানুষের উপর যাতে অন্যায় না হয়, সবাই এক হয়ে কি তা নিশ্চিত করতে পারে না? পারে না যৌতুক, বাল্যবিবাহ এবং এসব থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, যেমন নারী নির্যাতন, এর বিরুদ্ধে সবাই মিলে অবস্থান নিতে? শুরু হোক না গ্রামে গ্রামে বিভিন্ন বিষয়ে প্রতিযোগিতা – বছর শেষের উৎসবে প্রত্যেকে নিজ নিজ গ্রাম নিয়ে গর্ব করুক - কোন গ্রাম হয়ত শিক্ষায়, কোন গ্রাম কৃষিতে, আর কোন গ্রাম নারী অধিকার এবং মর্যাদা রক্ষায়।

আমাদের আছে প্রাণশক্তিতে ভরপুর বিশাল একটা তরুণ প্রজন্ম। দেশের ৫০ ভাগ মানুষের বয়স ২৩ বা তারও কম। এই তরুণ তরুণীদের মাঝে স্বপ্ন, উদ্যম, উৎসাহের কোন ঘাটতি নেই। ওরা পরাজয় খুব একটা দেখেনি – তাই পরাজয় খুব একটা মানতেও চায় না। ওরা পছন্দ করে একসাথে সময় কাটাতে। দেশের তরুন তরুণীরা না হয় দল বেঁধে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে সমস্যা সমাধানে ঝাঁপিয়ে পড়ল – হতে পারে নিজেদের কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয়ের কোন সমস্যা, হতে পারে নিজেদের এলাকার। কেউ হয়ত উদ্ভাবন করে বসলো এমন কিছু যা দিয়ে অনেক অনেক মানুষের জীবনের একটা দিক পুরোপুরি বদলে যাবে। আমাদের আধুনিক প্রযুক্তিনির্ভর তরুণ প্রজন্ম হয়ত সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমগুলোকে সমাজ পরিবর্তনের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করতে চাইবে!

বাকিরাও তখন বসে থাকবে কেন?

বাবসায়ি সমাজ এই বিশাল কর্মযজ্ঞে তাদের অভিজ্ঞতা নিয়ে দুহাত বাড়িয়ে দেবেন – নিজেদেরও মুনাফা হল, অনেক মানুষের জীবন পরিবর্তনের অংশও হওয়া গেলো। তরুণদের সাথে পাল্লা দিয়ে পেশাজীবীরা নিজ নিজ দায়িত্ব আরও সৃজনশীলতা, আরও দক্ষতার সাথে সম্পাদন করবেন। দেশের আলোকিত মানুষরা উন্নত নৈতিক চরিত্র এবং মূল্যবোধ সমৃদ্ধ সুনাগরিক গড়ে তুলতে অবদান রাখবেন। সত্য এবং সুন্দরের স্বপ্নে সবাইকে অনুপ্রাণিত করবেন সাহিত্যিক আর শিল্পীরাপেশাজীবী আর শ্রদ্ধেয় শিক্ষক সমাজ এক হয়ে মনের মত করে গড়ে তুলবেন নিজ নিজ প্রতিষ্ঠান। আইনজীবীরা এক হয়ে লড়বেন জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠায় আর জনগণ সকল অন্যায়, অবিচার তা যেকোন বেক্তি, প্রতিষ্ঠান বা গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে হোক না কেন - সম্মিলিত প্রতিরোধ গড়ে তুলবেন। সাংবাদিকরা সত্য অনুসন্ধান ও প্রকাশ করবেন এবং জনগণ তাদের নিরাপত্তা নিশ্চিত করবেন। শিক্ষাবিদদের অনুপ্রেরণায় দেশের প্রত্যেক নাগরিক হয়ে উঠবেন চিন্তাশীল – নিজেদের জ্ঞান বিচারবুদ্ধি যুক্তি বিবেচনা দিয়ে তারা সিদ্ধান্ত নেবেন। দেশের বুদ্ধিজীবী আর সুশীল সমাজ বাস্তব কর্ম পরিকল্পনায় নিজেদের মেধার সবটুকু ঢেলে দিবেন। হয়ত এমন সংগঠন গড়ে উঠবে, যে সংগঠন দেশের বিভিন্ন প্রান্তের বিভিন্ন উদ্যোগ এর সমন্বয় করবে, দেশের বিভিন্ন সমস্যার নতুন নতুন সমাধান বের করে বাস্তবায়ন করবে, জাতিধর্মবর্ণ নির্বিশেষে প্রত্যেক শ্রেণীপেশার মানুষের স্বার্থ যাতে সংরক্ষিত হয় তা গনতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় সবার মতামতের ভিত্তিতে নিশ্চিত করবে।

আর আমাদের রাজনীতিবিদরা?

রাজনীতিবিদরাও তখন স্বার্থ ভুলে সবার সাথে হাতে হাত মিলিয়ে কাজ করবেন – না মিলিয়ে পার পাবেনই বা কেমন করে!

এভাবে প্রত্যেকেই যখন নিজ নিজ অবস্থানে থেকে নিজের চেয়েও বড় কোন স্বপ্নে নিজেকে যুক্ত করবেন, দেশটাও তখন স্বপ্নের মত করে গড়ে উঠবে। বড় কোন স্বপ্নকে সামনে রেখে সেই লক্ষ্যে কাজ করার মত আনন্দ আর কিছু আছে?

আমরা কি তবে স্বপ্ন দেখতে পারি?

আমরা কি স্বপ্ন দেখতে পারি, আগামী নির্বাচনের আগেই দেশের রাজনীতিতে বড় ধরনের পরিবর্তন আসবে? আগামী নির্বাচনটা হবে কালো টাকা, পেশি শক্তির প্রভাব মুক্ত। প্রত্যেক এলাকার সাংসদ প্রার্থীরা মনোযোগ দিবেন সবাইকে নিয়ে নিজ নিজ এলাকার বিভিন্ন সমস্যার সমাধানে। যিনি এই কাজ সবচেয়ে দক্ষতা আর সৃজনশীলতা আর সততার সাথে করে সবার আস্থা অর্জন করতে পারবেন, এলাকার জনগণ তাকেই বেছে নেবেন। তিনি হবেন জনগণের নন্দিত নেতা। তিনি জানেন, দলে বা সরকারে পদের চাইতেও বেশি স্থায়ী এবং গুরুত্বপূর্ণ হল জনগণের হৃদয়ে স্থান। আমরা কি আশা করতে পারি না, আগামী নির্বাচন হবে মেধা ভিত্তিক? সাংসদ পদ প্রার্থীরা জরিপ করে জনগনের মন বোঝার চেষ্টা করবেন এবং সেই অনুযায়ী মন জয়ের চেষ্টা করবেন। তারা শুধু নিজেদের বক্তব্য জনগণকে শোনাবেন না, বরং তাদের আগ্রহ বেশি থাকবে জনগণের বক্তব্য, আশা আকাঙ্ক্ষা, সমস্যা শোনায় এবং সেইসব আশা আকাঙ্ক্ষা, সমস্যা বাস্তবায়নে বাস্তব কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণে। আমরা কি আশা করতে পারি না, অন্তত কয়েকটি এলাকায় কয়েকজন সাংসদ প্রার্থী বা মনোনয়ন প্রত্যাশী খুব দ্রুত এই ধরনের উদ্যোগ নিয়ে সবার জন্য উদাহরণ সৃষ্টি করবেন - আমাদের মিডিয়া তাদের উদ্যোগকে আনুপ্রানিত করবে – আর তাতে - যারা উদ্যোগ গ্রহণ করা থেকে পিছিয়ে থাকবেন, নির্বাচনে জয়ের সম্ভবনায়ও তারা পিছিয়ে পড়বেন। এই বোধোদয় রাজনীতিতে সুস্থ প্রতিযোগিতার সূচনা করতে পারে। পরিবর্তনের এই হাওয়া দ্রুত স্থানীয় সরকার প্রতিনিধি নির্বাচন আর নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের মাঝে ছড়িয়ে পড়বে। আর এভাবেই হয়ত দেশের রাজনীতিতে নতুন ধারার সূচনা হবে।

বাংলাদেশের নতুন ধারার রাজনীতিতে রাজনৈতিক দলগুলোও হবে নতুন ধারার। গনতন্ত্রের চর্চা শুধু দেশ পরিচালনায় না, বরং রাজনৈতিক দলগুলোর অভ্যন্তরীণ কর্ম পরিকল্পনায়ও ফুটে উঠবে। দলের শীর্ষ পদসহ প্রতিটি পদে নিয়োগ গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া অনুসরণ করে নির্ধারিত হবে। এতে যোগ্য বাক্তিদের বিজয় নিশ্চিত হবে। দলের প্রত্যেক নেতাকর্মী সমর্থক এবং তাদের মতামত হয়ে উঠবে গুরুত্বপূর্ণ। প্রত্যেক দলের সৎ, যোগ্যতর নেতাকর্মী সমর্থকরা এই শুভ পরিবর্তনে ভূমিকা রাখবেন। স্থানীয় থেকে জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক - দলের প্রতিটি পর্যায়ে একক কর্তৃত্বের বদলে ক্ষমতার ভারসাম্য থাকবে। আর ক্ষমতার ভারসাম্য থাকলে নিশ্চিত হবে জবাবদিহিতা। প্রতিটি নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচনেও গণতান্ত্রিক মূল্যবোধ প্রাধান্য পাবে। জনগণের আস্থা, জনগণের মন জয় করে দলের নেতা কর্মীরা প্রার্থিতা নিশ্চিত করবেন। দেশের কোন রাজনৈতিক দল যদি দ্রুত এসব ইতিবাচক পরিবর্তন এনে সবার দৃষ্টি আকর্ষণ করতে পারে, তা দেশের সব রাজনৈতিক দলগুলোর জন্য অনুকরণীয় আদর্শ হয়ে থাকবে।

নতুন ধারার রাজনৈতিক দলগুলোর প্রতিযোগিতার মাধ্যমে যে দল বা জোট ক্ষমতায় আসবে, দেশের এবং দেশের জনগণের স্বার্থকে অগ্রাধিকার দিয়ে তারা নতুন নতুন লক্ষ্যমাত্রা এবং সেসব লক্ষ্যমাত্রা বাস্তবায়নে সৃজনশীল কর্মসূচি হাতে নেবে। আগামী সরকার বিভিন্ন সূচকে উন্নতিকে লক্ষ্যমাত্রা হিসেবে নিয়ে কর্ম পরিকল্পনা হাতে নেবে – জিডিপি প্রবৃদ্ধির হারকে ৮% এ উন্নীত করবে, মাথাপিছু আয়ের দিক দিয়ে প্রতিবেশী দেশগুলোকে ছাড়িয়ে যাবে, দুর্নীতির সূচকে ব্যাপক উন্নতি দেখাবে, অপরাধ শক্তভাবে দমন করে বিভিন্ন অপরাধ সূচকে উন্নতি দেখাবে, বিভিন্ন সামাজিক সূচকে (যেমন শিক্ষা, শিশু মৃত্যু হার ইত্যাদি) লক্ষ্যমাত্রা অর্জন করবে। নিজেদের মানদণ্ডে নিজেদের সাফল্য, অপরের বার্থতার প্রচার নয়, বরং আন্তর্জাতিক মানদণ্ডই সাফল্য - বার্থতার মূল্যায়ন করবে।

আমরা দেখতে চাই দারিদ্রমুক্ত, অন্যায়-অপরাধ-দুর্নীতি মুক্ত সুখী সমৃদ্ধ বাংলাদেশ


“নেক্সট ইলেভেন” এ থাকা ১১ টি দেশের একটি বাংলাদেশ – একদিন বিশ্বের অন্যতম বৃহৎ অর্থনীতির দেশ হয়ে উঠবে এমন স্বপ্ন আমরা দেখতেই পারি।