বাংলাদেশের নারীরা বেশ কিছু পরিসংখ্যানে অনন্য।
- গ্রামীণ ব্যাংকের ৮৫ লক্ষাধিক গ্রাহকের মাঝে ৯৭% নারী। এই নারীরা ক্ষুদ্রঋণ গ্রহণ করে স্বাবলম্বী হচ্ছেন।
- গার্মেন্টস কর্মীর সংখ্যা প্রায় ৪০ লক্ষ, যার ৮৫% এর উপর নারী।
নারীর ক্ষমতায়নে গ্রামীণ, ব্র্যাকসহ এনজিওগুলোর ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ। আমাদের দেশের সরকার স্বাধীনতার পর থেকেই উপলব্ধি করতে পেরেছে, সরকারের একার পক্ষে দারিদ্র্য দূরীকরণ সম্ভব নয়।
তাই সরকার স্বাধীনতার পর থেকেই এনজিওগুলোর বিকাশের সুযোগ করে দিয়েছে।
গত দশকে দেশের শিল্প ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় ঘটনা গার্মেন্টস শিল্পের বিকাশ। এই গার্মেন্টস শিল্প গড়ে উঠেছে নারীদের শ্রমে।
শুধু কি দারিদ্র্য দূরীকরণে নারীদের অংশগ্রহণ?
শিক্ষা ক্ষেত্রে চিত্রটা আমরা দেখি।
- আমাদের দেশের মেডিক্যাল কলেজগুলোতে প্রায় ৫৫-৬০% ছাত্রী (৪০-৪৫% ছাত্র)।
মেয়েদের জন্য ১০ম শ্রেণী পর্যন্ত অবৈতনিক শিক্ষা এবং ছাত্রীদের জন্য বৃত্তি - নারী শিক্ষার প্রসারে ভূমিকা রেখেছে।
আমাদের রাজনীতি নিয়ে যতই অভিযোগ থাকুক, একটা দিক দিয়ে আমাদের রাজনীতি পৃথিবীতে অনন্য - আমাদের প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রী দুইজনই নারী।
দেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ দুটি স্থান দুইজন নারীর দখলে - এটা নিশ্চয় আমাদের দেশের নারীদের অনুপ্রেরণা হিসেবে কাজ করে।
নারী অগ্রগতি, ক্ষমতায়নের মাধ্যমে (অনেকের অলক্ষ্যেই) আমাদের দেশে সামাজিক অগ্রগতি ঘটেছে।
সামাজিক নানা সূচক, যেমন -
- শিশু মৃত্যুহার
- গড় আয়ু
- নারী শিক্ষা
- শিশু পুষ্টি
- শিশুদের টিকা - ভ্যাক্সিন দেওয়ার হার
নিচের স্টাটিস্টিক্সগুলো দেখুন।
"নারী অগ্রগতি, ক্ষমতায়নের মাধ্যমে সামাজিক অগ্রগতি" - কিভাবে?
- শিক্ষিত - স্বাবলম্বী নারীরা ছেলেমেয়ে নেন কম (শিশুর জন্মের সময় কয়েকমাস ছুটি নেওয়া ইত্যাদি কারণে)। ছেলেমেয়ে কম নিলে তাদের প্রত্যেকের সর্বোচ্চ যত্ন নেওয়া সম্ভব হয়।
- আবার, পরিবারে মায়েদের ভূমিকা বেশি থাকলে মেয়ে শিশুরা ছেলে শিশুদের সমান অধিকার, যত্ন, শিক্ষার সুযোগ পায়।
- শিক্ষিত - স্বাবলম্বী নারীরা শিশুদের যত্ন নেন বেশি। টিকা - ভ্যাক্সিন দেওয়া ইত্যাদি নিশ্চিত হয়। শিশুদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে। এসব ব্যাপার পরিসংখ্যানে শিশু মৃত্যু হার কমিয়ে আনে; শিশু পুষ্টি (স্বাস্থ্যবান শিশু) ইত্যাদি সূচকেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
আমাদের দেশে সামাজিক ক্ষেত্রে নারীর ক্ষমতায়নের ভূমিকা দেখে নোবেল বিজয়ী অর্থনীতিবিদ অমর্ত্য সেন বলেছেন, যে দুটি দেশ থেকে ভারত সবচেয়ে বেশি শিখতে পারে তাদের একটি হল চায়না, অপরটি হল বাংলাদেশ [2]।
রেফরেন্স
No comments:
Post a Comment