Friday, August 22, 2014

আজকের উপলব্ধিতে বাংলাদেশ (১৪/৮/১৪)

1.
আমাদের দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমান্বয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

জনবিছিন্ন হতে হতে বিএনপি'র মত এককালের বড় দল শক্তিহীন হয়ে ধীরে ধীরে অস্তিত্ব সংকটের দিকে যাবে।

আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ একতরফাভাবে ৫ জানুয়ারিতে "তামাশার" একটি নির্বাচন করে ফেলেছে (যেখানে ৩০০ টির মধ্যে ১৫৪ টি নির্বাচনী এলাকায় কোন নির্বাচন হয়নি) অথচ বিএনপি এখনও জনগণকে নিয়ে অহিংস কিন্তু শক্তিশালী কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি।
জনগণ সঙ্গত কারণেই ভাবে - জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, জেল-জুলুম সহ্য করে বিএনপির আন্দোলনে যে নামবো - বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে নতুন কি দেবে?   

বিএনপি'র হিসেব ছিল, আলেম ওলামা সমাজ এবং মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের অধিকাংশ ভোট বিএনপি'র পক্ষে পড়বে।
কিন্তু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলেম ওলামা সমাজ এবং মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের প্রতিটি ভোট (৩৫ লক্ষাধিক ভোট) নাগরিক শক্তির প্রার্থীর পক্ষে পড়বে।
(বিএনপি প্রচার করে, তারা ইসলামী চেতনাসম্পন্ন। তবে চরম দুর্নীতি - অন্যায় - সন্ত্রাস এ নিমজ্জিত থেকে কিভাবে ইসলামী চেতনা ধারণ করা যায় - তা আমাদের জানা নেই!)

বিএনপি জোটে আছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, যেটি ৭১ এর আগে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের [1] একটি শাখা ছিল।
বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন কমিশনে বৈধ নিবন্ধন নেই।
তার চেয়েও বড় কথা, কয়েকজন মানবতাবিরধী যুদ্ধাপরাধী এবং কয়েকজন চরমপন্থি (Extremist) সন্ত্রাসী ছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বলে এখন কিছু নেই।  

বিএনপি দাবি করে তাদের জোটটি "২০ দলীয়"।
কিন্তু বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি, এই দলগুলোর মাঝে আছে "সাম্যবাদী দল (একাংশ)" - যেটি কয়েকজন প্রতারক ব্যক্তির সমষ্টি (সাম্যবাদী দলের সাথে তাদের কোনকালে কোন সম্পর্ক ছিল না) এবং নির্বাচন কমিশনে তাদের বৈধ নিবন্ধন নেই।


বিএনপি শীর্ষ নেতৃত্বের মেধাহীনতা এবং নির্বুদ্ধিতা স্পষ্ট হয় - যখন আমরা দেখি - এই প্রতারক ব্যক্তিদের প্রকৃত পরিচয় নিরূপণ না করেই বিএনপি তাদের "দল" হিসেবে জোটে বরণ করে নেয় এবং নিজেদের "২০ দলীয় জোট" হিসেবে ঘোষণা করে।
[এভাবে কয়েকজন ব্যক্তি একত্রিত হয়ে দুই জোটের কাছে যাওয়া শুরু করলে দুই জোটের সদস্য সংখ্যা শীঘ্রই ৩০ বা ৪০ ছাড়াতে পারে এবং দেখা যাবে নির্বাচন কমিশনেও এতগুলো নিবন্ধিত দল নেই!]


বিএনপি জোটের বাকি ১৭টি দলের কয়টি এখনও বিএনপি'র সাথে আছে আর কয়টি নতুন একটি দলে একীভূত হওয়ার অপেক্ষায় আছে - তার হিসেব বিএনপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নেই!
এই ১৮ "দল"এর মাঝেও নির্বাচন কমিশনে বৈধ নিবন্ধনবিহীন দল রয়েছে।         

সবচেয়ে বড় কথা - সারা দেশের মানুষ জনকল্যাণমূলক নতুন রাজনীতির স্বপ্নে বিভোর।
দেশের মানুষের কাছে বিএনপির দুর্নীতি - সন্ত্রাসের রাজনীতির যে আর অ্যাপিল নেই, সারা দেশে বিএনপি যে সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে - কিছুদিন পর পর সংবাদ সম্মেলন ডাকার মাঝে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখা ঢাকায় অবস্থানরত বিএনপি'র গুটিকয়েক নেতা - তা আঁচও করতে পারেননি। 
(আলেম ওলামা সমাজ এবং মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা যে বিএনপি থেকে সরে এসেছেন - এটাও যেভাবে তারা ঢাকায় বসে সংবাদ সম্মেলন করার ফাঁকে আঁচও করতে পারেননি!)   

আগামী কয়েক মাসে বিএনপি'র অত্যন্ত দুর্বল ও ক্ষীণ হয়ে ওঠা পরিষ্কার হয়ে উঠবে এবং দলটির জন্য অস্তিত্ব রক্ষা করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

3.জঙ্গিবাদ এবং চরমপন্থামুক্ত বাংলাদেশ গড়ার পথে অগ্রগতি

বাংলাদেশের মাটিতে জঙ্গিবাদ, চরমপন্থা এবং নাশকতা সৃষ্টিকারিদের মেনে নেওয়া হবে না।


4."মাদকমুক্ত বাংলাদেশ" গড়ার পথে অগ্রযাত্রা

বাগাতিপাড়ায় তিন মাদক ব্যবসায়ী আটক (banglanews24.com)

5.ভেজাল সার কারখানার বিরুদ্ধে অভিযান

যশোরে তিন সার কারখানা সিলগালা, মালিকসহ আটক ৪ (banglanews24.com)

6.আজ ১৫ আগস্ট। জাতীয় শোক দিবস।
১৯৭৫ সালের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সপরিবারে হত্যা করা হয়।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মাধ্যমেই আমরা স্বাধীন বাংলাদেশ পেয়েছি।
আজকের এই দিনে জাতির জনক বঙ্গবন্ধুর প্রতি আমাদের শ্রদ্ধা।


7.একটি অসাধারণ আত্মজীবনী: প্রফেসর ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল

"মাঝে মাঝে আমার মনে হয় আমাদের কতো বড় সৌভাগ্য যে, বাংলাদেশের মাটিতে বঙ্গবন্ধুর মতো একজন মানুষের জন্ম হয়েছিল। ঠিক যেই সময়টিতে দরকার হয়েছিল, তখন যদি তার মতো একজন মানুষের জন্ম না হতো তাহলে কী হতো? তাহলে কী বাঙালিরা নিজের একটা দেশের স্বপ্ন দেখতে পারতো? 

আমার মনে আছে, প্রথমবার আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় আসার পর আমি আমার স্ত্রীকে বলেছিলাম,‌ ‘চলো আমরা একটা টেলিভিশন কিনে আনি, এখন নিশ্চয়ই বঙ্গবন্ধুকে টেলিভিশনে দেখাবে!’ শুধুমাত্র তাকে দেখার জন্য আমরা একটা টেলিভিশন কিনে এনেছিলাম! 

বঙ্গবন্ধুকে একজন মানুষ হিসেবে অনুভব করার অবিশ্বাস্য ঘটনাটি ঘটেছে ২০১২ সালে, যখন তার নিজের হাতের লেখা ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি হাতে পেয়েছি। 

বইটিতে অসংখ্য বিষয় আছে। যেমন ধরা যাক, বাঙালিদের কথা। তিনি বাঙালিদের কীভাবে দেখেছেন? বইয়ের অনেক জায়গায় তাদের কথা লেখা আছে। আমার পছন্দের একটা অংশ যখন তাদেরকে পাকিস্তানিদের সাথে তুলনা করেছেন (পৃষ্ঠা ২১৪): ‘প্রকৃতির সাথে মানুষের মনেরও একটা সম্বন্ধ আছে। বালুর দেশের মানুষের মনও বালুর মত উড়ে বেড়ায়। আর পলিমাটির বাংলার মানুষের মন ঐ রকমই নরম, ঐ রকমই সবুজ। প্রকৃতির অকৃপণ সৌন্দর্যে আমাদের জন্ম, সৌন্দর্যই আমরা ভালবাসি’। 

এই বাঙালিদের জন্যে তার বুকে ছিল গভীর ভালোবাসা। নির্বাচনের সময় একবার হেঁটে হেঁটে প্রচারণার কাজ চালাচ্ছেন। তখন এক হতদরিদ্র বৃদ্ধা মহিলার সাথে দেখা। বঙ্গবন্ধুকে দেখার জন্যে কয়েক ঘণ্টা থেকে দাঁড়িয়ে আছে, তাকে ধরে নিজের কুঁড়েঘরে এক বাটি দুধ, একটা পান আর চার আনা পয়সা দিয়েছে, বলেছে, ‘খাও বাবা, আর পয়সা কয়টা তুমি নেও, আমার তো কিছু নেই’। বঙ্গবন্ধু সেই পয়সা না নিয়ে উল্টো তাকে সাহায্য করার চেষ্টা করেছিলেন, লাভ হয়নি। 

সেই হতদরিদ্র মহিলার বাড়ি থেকে বের হবার পর, বঙ্গবন্ধু লিখছেন (পৃষ্ঠা ২৫৬): ‘নীরবে আমার চক্ষু দিয়ে দুই ফোঁটা পানি গড়িয়ে পড়েছিল, যখন তার বাড়ি থেকে বেরিয়ে আসি। সেইদিনই আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম, মানুষরে ধোঁকা আমি দিতে পারব না’। 

পুরো বইটিতে অন্যরকম অসংখ্য ঘটনার বর্ণনা আছে। কীভাবে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করে ধীরে ধীরে একটি রাজনৈতিক দল গড়ে তুলেছেন তার নিখুঁত বর্ণনা আছে। ষড়যন্ত্র, সাম্প্রদায়িকতা, বাধাবিপত্তি, ভয়ঙ্কর অর্থকষ্ট, পুলিশের নির্যাতন, বিশ্বাসঘাতকতা সবকিছুকে সামাল দিয়ে কীভাবে একটা রাজনৈতিক দল গড়ে তুলতে হয়, সেটি এর চাইতে সুন্দর করে আর কোনো বইতে লেখা আছে বলে আমার জানা নাই। 

মাঝে মাঝে যে হাস্যরস বা কৌতুক নেই তা নয়। রাতের বেলা নৌকা করে যাচ্ছেন, বঙ্গবন্ধু ঘুমিয়ে আছেন তখন ডাকাত পড়েছে। এলাকার সবাই বঙ্গবন্ধুকে চেনেন, তাকে ভালোবাসে। ডাকাতরা যখন জানতে পারলো নৌকায় বঙ্গবন্ধু শুয়ে আছেন, তখন ডাকাতি না করেই মাঝিকে এক ঘাঁ দিয়ে বললো, ‘শালা আগে বলতে পারো নাই, শেখ সাহেব নৌকায়’। 

বঙ্গবন্ধুর কাছে রাজনীতির বিষয়টি ছিল খুবই স্পষ্ট এবং সেটি ছিল খুবই মহৎ কাজ। বার বার বলেছেন, (পৃষ্ঠা ১২৮) ‘যেকোনো মহৎ কাজ করতে হলে ত্যাগ ও সাধনার প্রয়োজন। যারা জীবনে ত্যাগ করতে প্রস্তুত নয়, তারা জীবনে কোনো ভাল কাজ করতে পারে নাই’। রাজনীতি করে তার জীবনে এক প্রকার পূর্ণতা এসেছিল। কারণ, নির্বাচনে মুসলিম লীগকে পুরোপুরি ধরাশায়ী করে লিখেছেন, (পৃষ্ঠা ২৫৭): ‘আমার ধারণা হয়েছিল, মানুষকে ভালবাসলে মানুষও ভালবাসে। যদি সামান্য ত্যাগ স্বীকার করেন, তবে জনসাধারণ আপনার জন্য জীবন দিতেও পারে’। 

এই লেখার শুরুতে আমি বলেছিলাম, ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ বইটি সবার পড়া উচিৎ- যারা দেশ চালাচ্ছে তাদেরও। আমার কেন জানি মনে হয়, যারা দেশ চালাচ্ছ্নে, তাদের সবাই এই বইটি পড়েননি- কিংবা তার চাইতেও দুঃখের বিষয় হয়তো বইটি পড়েছেন কিন্তু বঙ্গবন্ধুর কথাগুলো বিশ্বাস করেননি। 

আমার এ রকম মনে হওয়ার কারণ হচ্ছে, এই বইয়ে সবচেয়ে বেশি যে কথাটি লেখা হয়েছে সেটি হচ্ছে (পৃষ্ঠা ১২৬): ‘শক্তিশালী বিরোধী দল না থাকলে গণতন্ত্র চলতে পারে না’ কিংবা (পৃষ্ঠা ১২০): ‘বিরোধী দল সৃষ্টি করতে না পারলে এ দেশে একনায়কতন্ত্র চলবে’।

শক্তিশালী বিরোধী দল দূরে থাকুক আমরা কী এই দেশে কোনো বিরোধী দল দেখতে পাচ্ছি? 

জামায়াতে ইসলামীর সঙ্গে রাজনীতি করে এবং বঙ্গবন্ধুকে অস্বীকার করে বলে আমি মনে করি, এই দেশে বিএনপির রাজনীতি করার কোনো নৈতিক অধিকার নেই। এখন বাকি আছে সংবাদ মাধ্যম। যতোই দিন যাচ্ছে আমার দেখছি সংবাদ মাধ্যমগুলোকে কেমন জানি গলাটিপে ধরা হচ্ছে। মন্ত্রীরা কারণে-অকারণে আজকাল সাংবাদিকদের গালাগাল করেন, ভয়-ভীতি দেখান। গণজাগরণ মঞ্চ যখন আওয়ামী লীগের সমালোচনা করল, তখন তাদেরকেও দুই টুকরো করে দেওয়া হলো। পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁস হয়েছে বলে আমি যখন চেচামেচি করছিলাম, তখন আমাকে নানাভাবে উপদেশ দেওয়া হয়েছিল, আমি যেন সরকারকে বিপদে না ফেলি। 

বঙ্গবন্ধু বার বার বলেছেন, সরকারকে ঠিক রাখতে হলে একটা শক্তিশালী বিরোধী দল দরকার। আমি এই দেশে তাই একটা বিরোধী দল খুঁজে বেড়াই। মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের একটা বিরোধী দল।"

8.দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতার প্রত্যাশা করছে এমসিসিআই (prothom-alo.com)


রেফরেন্স
  1. Jamaat-e-Islami Pakistan

No comments:

Post a Comment