Thursday, October 2, 2014

বিলীন হওয়ার পথে বিএনপি

1.

নাগরিক শক্তি আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মোট প্রদত্ত ভোটের ৮০% এর বেশি ভোট নিয়ে এবং বাংলাদেশের রাজনীতির ইতিহাসে প্রথমবারের মত এককভাবে ৩০০ আসনের সবকটিতে জয়ী হয়ে ক্ষমতায় আসবে।



অপরদিকে, ৩০০ আসনের সবকটিতে বিএনপি প্রার্থীদের জামানত বাজেয়াপ্ত হবে (৮ ভাগের ১ ভাগ বা ১২.৫% এর চেয়ে কম ভোট পাওয়ায়)।
জাতীয়ভাবে বিএনপি সারা দেশে ৩% এর চেয়ে কম ভোট পাবে।


আমাদের দেশের প্রচলিত রাজনৈতিক দলগুলো ক্রমান্বয়ে জনবিচ্ছিন্ন হয়ে পড়ছে।

জনবিছিন্ন হতে হতে বিএনপি'র মত এককালের বড় দল শক্তিহীন হয়ে ধীরে ধীরে অস্তিত্ব সংকটের দিকে যাবে।

আওয়ামী লীগ সম্পূর্ণ একতরফাভাবে ৫ জানুয়ারিতে "তামাশার" একটি নির্বাচন করে ফেলেছে (যেখানে ৩০০ টির মধ্যে ১৫৪ টি নির্বাচনী এলাকায় কোন নির্বাচন হয়নি) অথচ বিএনপি এখনও জনগণকে নিয়ে অহিংস কিন্তু শক্তিশালী কোন আন্দোলন গড়ে তুলতে পারেনি।
জনগণ সঙ্গত কারণেই ভাবে - জীবনের ঝুঁকি নিয়ে, জেল-জুলুম সহ্য করে বিএনপির আন্দোলনে যে নামবো - বিএনপি ক্ষমতায় গিয়ে নতুন কি দেবে?   

বিএনপি'র হিসেব ছিল, আলেম ওলামা সমাজ এবং মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের অধিকাংশ ভোট বিএনপি'র পক্ষে পড়বে।
কিন্তু আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে আলেম ওলামা সমাজ এবং মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গদের প্রতিটি ভোট (৩৫ লক্ষাধিক ভোট) নাগরিক শক্তির প্রার্থীর পক্ষে পড়বে।
(বিএনপি প্রচার করে, তারা ইসলামী চেতনাসম্পন্ন। তবে চরম দুর্নীতি - অন্যায় - সন্ত্রাস এ নিমজ্জিত থেকে কিভাবে ইসলামী চেতনা ধারণ করা যায় - তা আমাদের জানা নেই!)

বিএনপি জোটে আছে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী, যেটি ৭১ এর আগে জামায়াতে ইসলামী পাকিস্তানের [1] একটি শাখা ছিল।

বর্তমানে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর নির্বাচন কমিশনে বৈধ নিবন্ধন নেই।
তার চেয়েও বড় কথা, কয়েকজন মানবতাবিরধী যুদ্ধাপরাধী এবং কয়েকজন চরমপন্থি (Extremist) সন্ত্রাসী ছাড়া বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী বলে এখন কিছু নেই।  

বিএনপি দাবি করে তাদের জোটটি "২০ দলীয়"।
কিন্তু বিশ্লেষণ করলে আমরা দেখি, এই দলগুলোর মাঝে আছে "সাম্যবাদী দল (একাংশ)" - যেটি কয়েকজন প্রতারক ব্যক্তির সমষ্টি (সাম্যবাদী দলের সাথে তাদের কোনকালে কোন সম্পর্ক ছিল না) এবং নির্বাচন কমিশনে তাদের বৈধ নিবন্ধন নেই।



বিএনপি শীর্ষ নেতৃত্বের মেধাহীনতা এবং নির্বুদ্ধিতা স্পষ্ট হয় - যখন আমরা দেখি - এই প্রতারক ব্যক্তিদের প্রকৃত পরিচয় নিরূপণ না করেই বিএনপি তাদের "দল" হিসেবে জোটে বরণ করে নেয় এবং নিজেদের "২০ দলীয় জোট" হিসেবে ঘোষণা করে।
[এভাবে কয়েকজন ব্যক্তি একত্রিত হয়ে দুই জোটের কাছে যাওয়া শুরু করলে দুই জোটের সদস্য সংখ্যা শীঘ্রই ৩০ বা ৪০ ছাড়াতে পারে এবং দেখা যাবে নির্বাচন কমিশনেও এতগুলো নিবন্ধিত দল নেই!]


বিএনপি জোটের বাকি ১৭টি দলের কয়টি এখনও বিএনপি'র সাথে আছে আর কয়টি নতুন একটি দলে একীভূত হওয়ার অপেক্ষায় আছে - তার হিসেব বিএনপি শীর্ষ নেতৃত্বের কাছে নেই!
এই ১৮ "দল"এর মাঝেও নির্বাচন কমিশনে বৈধ নিবন্ধনবিহীন দল রয়েছে।         

সবচেয়ে বড় কথা - সারা দেশের মানুষ জনকল্যাণমূলক নতুন রাজনীতির স্বপ্নে বিভোর।
দেশের মানুষের কাছে বিএনপির দুর্নীতি - সন্ত্রাসের রাজনীতির যে আর অ্যাপিল নেই, সারা দেশে বিএনপি যে সাংগঠনিকভাবে অত্যন্ত দুর্বল হয়ে পড়েছে - কিছুদিন পর পর সংবাদ সম্মেলন ডাকার মাঝে নিজেদের সীমাবদ্ধ রাখা ঢাকায় অবস্থানরত বিএনপি'র গুটিকয়েক নেতা - তা আঁচও করতে পারেননি। 
(আলেম ওলামা সমাজ এবং মাদ্রাসা সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিবর্গরা যে বিএনপি থেকে সরে এসেছেন - এটাও যেভাবে তারা ঢাকায় বসে সংবাদ সম্মেলন করার ফাঁকে আঁচও করতে পারেননি!)   

আগামী কয়েক মাসে বিএনপি'র অত্যন্ত দুর্বল ও ক্ষীণ হয়ে ওঠা পরিষ্কার হয়ে উঠবে এবং দলটির জন্য অস্তিত্ব রক্ষা করাই চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়াবে।

(১৪/৮/১৪)




2.
"'দলের ঐক্য বা অভ্যন্তরীণ সংহতি এখন বড় ধরণের প্রশ্নের মুখে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া, তারেক রহমানসহ অন্যান্য নেতাকর্মীদের বিরুদ্ধে দায়ের হওয়া মামলার খড়গ। সব মিলিয়ে নেতা-কর্মীরা ছন্নছাড়া হয়ে পড়েছেন।
 
ছাত্রদল এখন নির্জীব। ছাত্রত্ব আছে, আবার নেতৃত্ব দেওয়ার মতো উপযুক্ত—এমন নেতাই খুঁজে পাচ্ছেন না বিএনপির চেয়ারপারসন। 
 
আর যুবদল কার্যকারিতা হারিয়ে এখন দলের অন্য সংগঠনে বিলীন হওয়ার পর্যায়ে ঠেকেছে।  
 
আবার মূল দলের ঢাকা মহানগর কমিটি নিয়ে নতুন করে অস্বস্তিতে পড়েছেন বিএনপির শীর্ষ নেতৃত্ব। 
 
গত আমলে ‘হাওয়া ভবনের’ কথা মনে করে দলের প্রবীণ ও জ্যেষ্ঠ নেতাদের কেউ কেউ অস্বস্তিতে আছেন, আবার অনেকে দুর্ভাবনায় পড়েছেন।
 
দলের স্থায়ী কমিটির সদস্য জমিরউদ্দিন সরকার, স্থায়ী কমিটির অপর সদস্য তরিকুল ইসলাম এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক উপাচার্য অধ্যাপক ড. এমাজউদ্দিন আহমেদ দল নিয়ে হতাশা ব্যক্ত করেছেন।"

(৩১/৮/১৪)
 
 
3.
বিএনপি গত ঈদুল ফিতরের আগে ঘোষণা দিয়েছিল, ঈদের পর "তুমুল" আন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
ঈদ কেটে গেছে - কিন্তু সেরকম "তুমুল" কিছু আমাদের চোখে পড়েনি!


ব্যর্থ বিএনপি এবার ঘোষণা দিয়েছে, ঈদুল আযহার পর গড়ে তোলা হবে সেই কাঙ্ক্ষিত "তুমুল" আন্দোলন!

কিন্তু বিএনপির সাংগঠনিক অবস্থা দেখে আমাদের মনে প্রশ্ন জাগে, ঈদুল আযহার কথা যে বলছেন - এটা কি ২০১৪ সালের ঈদুল আযহা নাকি ২০১৭ সালের?


বিএনপি নেতৃবৃন্দ আজকাল প্রকাশ্যেই স্বীকার করছেন, "জনগণ বিএনপির উপর বিরক্ত"। প্রকৃতপক্ষে, এটা নেতদের নিজেদের বিরক্তির বহিঃপ্রকাশ। কারণ, বিরক্ত হতেও জনসমর্থন লাগে - আর সেটা বর্তমানে বিএনপির আছে কিনা সে বিষয়ে সন্দেহ প্রকাশ করার অবকাশ আছে।



৫ জানুয়ারিতে তামাশার একটি নির্বাচনে করে আওয়ামী লীগ অন্যায়ভাবে ক্ষমতা দখল করে রেখেছে আর তারপর এতগুলো মাস কেটে গেছে। বিএনপি আন্দোলন গড়ে তোলা দূরে থাক - বড় ধরণের সমাবেশই করতে পারেনি।



প্রকৃতপক্ষে সারা দেশের জনগণ এখন জনকল্যাণমূলক নতুন রাজনীতির স্বপ্নে বিভোর।

বিএনপির দুর্নীতি - সন্ত্রাসের রাজনীতির অ্যাপীল - জনগণ, এমনকি বিএনপি নেতাদের মাঝেও আর নেই।

বিএনপির সাংগঠনিক কর্মকাণ্ডও ঢাকায় বিএনপি কার্যালয়ে বসে কিছুদিন পরপর সংবাদ সম্মেলন করার মাঝেই সীমাবদ্ধ হয়ে পড়েছে। কিছুদিন পর পর সংবাদ সম্মেলন ডেকে আর যায় হোক - সরকার পতন হয় না!


তাও একদিক দিয়ে ভালো।

গত নির্বাচনের আগে বিএনপি নেতাদের অজ্ঞাত (!) স্থান থেকে ভিডিও বার্তা পাঠাতে দেখা যেত। সেই অজ্ঞাত স্থান কি একটি গুহা নাকি বন - তা জানার সুযোগ আজও আমাদের হয়নি!  



(16.09.14)




4.

"শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়, ‘শাবিপ্রবি ছাত্রদল’। আট অক্ষরের দু’টি শব্দ। মিছিলেও ওরা আটজন। ছাত্রদল শাবি শাখার উদ্যোগে এই মিছিলটি ক্যাম্পসের বাইরে বের হওয়ার পর মিছিলকারীরাও যেন লজ্জায় পড়ে যান!
বৃহৎ এই রাজনৈতিক দলের অঙ্গসংগঠন ক্রমশ, সংখ্যালঘু হচ্ছে এমন মন্তব্য করেছেন উপস্থিত অনেকে।"

  • "নাগরিক স্টুডেন্টস এসোসিয়েশান (NSA)" আত্নপ্রকাশের সাথে সাথে "ছাত্রদল" বিলীন হবে।

"চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যলয়ে অস্তিত্বহীন হয়ে পড়েছে ছাত্রদল।"

(22.09.14)




5.

আমরা কিছুদিন আগে দেখেছি, কয়েকজন ব্যক্তি একত্রিত হয়ে বিএনপি জোটের কাছে গেলেই - সেই অজুহাতে - বিএনপি তাদের জোটের দলসংখ্যা বাড়িয়ে ফেলে! এভাবে ১৮ দলীয় জোটকে আমরা হঠাৎ আবিষ্কার করি ১৯ দলীয় জোট হিসেবে এবং অতঃপর ১৯ দলীয় জোটকে আমরা কিছুদিন পর আবিষ্কার করি ২০ দলীয় জোট হিসেবে!

[আমরা চিন্তিত ছিলাম! কারণ নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত দল আছে ৪০টি। অতি উৎসাহী ব্যক্তিদের তৎপরতায় বিএনপি জোটের দলসংখ্যা ৪০ ছাড়িয়ে গেলে বিএনপির কিছু না এসে যাক - আমরাই লজ্জায় পড়ে যাই!]

এভাবে কারণে - অকারণে - নানা অজুহাতে জোটের সদস্য সংখ্যা বাড়িয়ে ফেলার প্রক্রিয়াটি বিএনপির কাছে অত্যন্ত আকর্ষণীয় হলেও প্রক্রিয়ার সমস্যাটি এখন ধীরে ধীরে উন্মোচিত হচ্ছে!

দিন কয়েক আগে খবরে এসেছে - ২০ দলীয় জোট ভেঙে হচ্ছে ১১ দলীয় জোট!

ফলে বিএনপি নেতৃত্বাধীন অংশটি "৯ দলীয় জোট"এ - অর্থাৎ "সংখ্যালঘু" জোটে রুপান্তরিত হচ্ছে!

[তবে মন্দের ভালো - নিবন্ধিত দলের সংখ্যা নিয়ে আমাদের দুশ্চিন্তার আর কোন কারণ নেই!] 

7. 

নাগরিক শক্তি যেদিন আত্নপ্রকাশ করবে সেদিন নির্বাচন কমিশনে নিবন্ধিত ১৫টি রাজনৈতিক দল নাগরিক শক্তিতে একীভূত হবে। প্রত্যেকটি দলের প্রধান সেদিন ১৫ টি দল বিলুপ্ত ঘোষণা করবেন।

সাথে যোগ দেবেন একটি দলের দেড় শতাধিক এমপি এবং অপর একটি দলের ত্রিশোরধ এমপি।


লিঙ্কস
দেশের রাজনীতিকে আরো অধুনিকীকরণে মাঠে নামছেন শতাধিক সাবেক এমপি ও অর্ধশতাধিক উপজেলা চেয়ারম্যান। এরা সবাই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শের অনুসারী। - See more at: http://www.priyo.com/2014/09/19/107516.html#sthash.dgF30jXk.dpuf

"দেশের রাজনীতিকে আরো অধুনিকীকরণে মাঠে নামছেন শতাধিক সাবেক এমপি ও অর্ধশতাধিক উপজেলা চেয়ারম্যান। এরা সবাই বিএনপির প্রতিষ্ঠাতা জিয়াউর রহমানের আদর্শের অনুসারী।
বিএনপি’র সাবেক যুগ্মমহাসচিব ও সাবেক সংসদ সদস্য আশ্রাফ হোসেন বলেন, জিয়াউর রহমানের আদর্শ বিচ্যুৎ, জাময়াতপন্থি ও দুনীর্তিবাজ নেতারা এ তালিকায় নেই।" 

(29.09.14)

No comments:

Post a Comment