"স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের জ্ঞাতসারেই চার সহযোগীসহ খুন হয়ে গেলেন নারায়ণগঞ্জের সিটি কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম। খুন হওয়ার আগে তিনি অপহূত হয়েছেন। তারও দুই সপ্তাহ আগে তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাসায় গিয়ে তাঁকে বলেছিলেন, তাঁকে হত্যা করা হবে। যারা তাঁকে হত্যা করতে চায়, তাদের নামও তিনি স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীকে বলেছিলেন।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলে আসছিলেন, অপহরণ, খুন ও গুমের ঘটনা গত বছরের তুলনায় এখনো কম। এটা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আর বিরোধী দল যখন সরকারের বিরুদ্ধে তাদের লোকজনকে গুম করার অভিযোগ করছিল, তখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছিলেন এই বলে যে বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মী মামলার আসামি, তাঁরা গ্রেপ্তারের ভয়ে নিজেরাই আত্মগোপনে চলে যাচ্ছেন, বিরোধী দল সেটাকেই গুম বলে দাবি করছে। এর মধ্যে দেশজুড়ে লেগে গেল অপহরণ, খুন ও গুমের মচ্ছব। গত এক সপ্তাহেই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি, লাশ পাওয়া গেছে আটজনের। এখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলছেন, এসব করছে বিরোধী দলের লোকজন।
অপহরণ, খুন ও গুমের মচ্ছব লাগিয়ে দেশজুড়ে যারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, তারা যেই হোক, তাদের এমন ভয়ংকর দৌরাত্ম্যের মধ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ রকম অবস্থায় তাঁর বিদায় নেওয়া উচিত কি না, প্রথম আলোর প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন. ‘আমাদের পদত্যাগ কেউ চায়, তা আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম।’" [1] [2]
তার সপ্তাহ দুই পর চার সহযোগীসহ সত্যিই অপহূত হলেন কাউন্সিলর নজরুল ইসলাম। এবার তাঁর স্বজনেরা কাঁদতে কাঁদতে গিয়ে হাজির হলেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বাসায়। নজরুলের বৃদ্ধ মা মন্ত্রীর কাছে আকুতি জানালেন, ‘বাবা, যে করেই হোক, আমার ছেলেকে ফিরিয়ে দেন।’ কিন্তু নজরুল জীবিত ফিরে এলেন না। অপহূত আরও ছয়জনের সঙ্গে তিনিও লাশ হয়ে ভাসলেন শীতলক্ষ্যা নদীতে।
অতঃপর আমাদের স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর বক্তব্য: ‘আমার কাছে নজরুল এসেছিল, নামও বলে গিয়েছিল। আবার সকালে তার ছেলেমেয়েগুলো এসে কান্নাকাটি করে গেল। সবাই ভালো ছাত্রছাত্রী, জিপিএ-৫ পাওয়া। আমি এখন তাদের কাছে গিয়ে কী বলব?’
জনগণের নিরাপত্তা বিধান ও আইন প্রয়োগ ব্যবস্থার অকার্যকারিতা প্রতিমন্ত্রীর নিজের বক্তব্যেও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সাত ব্যক্তির অপহরণ ও হত্যার পর আসামিদের ধরার ব্যাপারে সরকারের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। শুরু থেকেই বিষয়টিকে নাকি অনেক গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য কিছু সূত্রে সংবাদমাধ্যম জানতে পেরেছে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। তিনি অপেক্ষা করছিলেন ‘ওপরের নির্দেশনা’র। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে ভুগতে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বারবার বলছিলেন যে তিনি চেষ্টার কোনো ত্রুটি করছেন না। তারপর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গণভবন থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আসামিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। দু-এক দিনের মধ্যেই ‘বড় একটা কিছু হবে’।
এই অবস্থায় আরও আজব আজব কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। যেমন, শুক্রবার তিনি বললেন, পরিস্থিতি শান্ত না হলে কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। এই কথার মানে কী? ‘পরিস্থিতি’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন তিনি?
রাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও দারুণ কথা বলেছেন: আমরা যাদের গ্রেপ্তার করতে চাচ্ছি, তারা তো এখন আর জনসমক্ষে নেই, আত্মগোপনে চলে গেছে। তাঁর কথায় মনে হয়, তিনি এমন প্রত্যাশা করেন যে খুনি-অপহরণকারীরা অপরাধ সেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সামনে ঘুরে বেড়াবে, যেন তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়!
জনগণের নিরাপত্তা বিধান ও আইন প্রয়োগ ব্যবস্থার অকার্যকারিতা প্রতিমন্ত্রীর নিজের বক্তব্যেও স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে। তিনি সংবাদমাধ্যমকে বলেছেন, সাত ব্যক্তির অপহরণ ও হত্যার পর আসামিদের ধরার ব্যাপারে সরকারের চেষ্টার ত্রুটি ছিল না। শুরু থেকেই বিষয়টিকে নাকি অনেক গুরুত্বের সঙ্গে নেওয়া হয়েছিল। কিন্তু স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের অন্য কিছু সূত্রে সংবাদমাধ্যম জানতে পেরেছে, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইন প্রয়োগের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত নিতে পারছিলেন না। তিনি অপেক্ষা করছিলেন ‘ওপরের নির্দেশনা’র। সিদ্ধান্তহীনতায় ভুগতে ভুগতে তিনি সংবাদমাধ্যমকে বারবার বলছিলেন যে তিনি চেষ্টার কোনো ত্রুটি করছেন না। তারপর, প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করে গণভবন থেকে বেরিয়ে এসে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, প্রধানমন্ত্রী আসামিদের গ্রেপ্তারের নির্দেশ দিয়েছেন। দু-এক দিনের মধ্যেই ‘বড় একটা কিছু হবে’।
এই অবস্থায় আরও আজব আজব কথা বলছেন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী। যেমন, শুক্রবার তিনি বললেন, পরিস্থিতি শান্ত না হলে কোনো আসামিকেই গ্রেপ্তার করা যাচ্ছে না। এই কথার মানে কী? ‘পরিস্থিতি’ বলতে কী বোঝাচ্ছেন তিনি?
রাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আরও দারুণ কথা বলেছেন: আমরা যাদের গ্রেপ্তার করতে চাচ্ছি, তারা তো এখন আর জনসমক্ষে নেই, আত্মগোপনে চলে গেছে। তাঁর কথায় মনে হয়, তিনি এমন প্রত্যাশা করেন যে খুনি-অপহরণকারীরা অপরাধ সেরে আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীগুলোর সামনে ঘুরে বেড়াবে, যেন তাদের গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়!
আসলে নারায়ণগঞ্জে অন্তত একজন আসামি সে রকম সুযোগ দিন দুয়েক বহাল রেখেছিলেন। কাউন্সিলর নজরুল তাঁর চার সহযোগীসহ অপহূত হন ২৭ এপ্রিল রোববার দুপুরে। এ ঘটনায় তাঁর পরিবার আরেক কাউন্সিলর ও আওয়ামী লীগের স্থানীয় নেতা নূর হোসেনকে আসামি করে মামলা দায়ের করে। সেদিন ও তার পরদিন সোমবার নূর হোসেন প্রকাশ্যে ঘুরে বেড়িয়েছেন, সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলেছেন। কিন্তু তখন তাঁকে স্পর্শ করা হয়নি। সাত অপহরণ নিয়ে দেশজুড়ে ব্যাপক চাঞ্চল্য সৃষ্টি হলে নূর হোসেন আত্মগোপনে চলে গেলেন।
কিছুদিন আগে পর্যন্ত স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলে আসছিলেন, অপহরণ, খুন ও গুমের ঘটনা গত বছরের তুলনায় এখনো কম। এটা নিয়ে উদ্বেগের কিছু নেই। আর বিরোধী দল যখন সরকারের বিরুদ্ধে তাদের লোকজনকে গুম করার অভিযোগ করছিল, তখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বিষয়টি উড়িয়ে দিয়েছিলেন এই বলে যে বিরোধী দলের অনেক নেতা-কর্মী মামলার আসামি, তাঁরা গ্রেপ্তারের ভয়ে নিজেরাই আত্মগোপনে চলে যাচ্ছেন, বিরোধী দল সেটাকেই গুম বলে দাবি করছে। এর মধ্যে দেশজুড়ে লেগে গেল অপহরণ, খুন ও গুমের মচ্ছব। গত এক সপ্তাহেই অপহরণের ঘটনা ঘটেছে ২৪টি, লাশ পাওয়া গেছে আটজনের। এখন স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী বলছেন, এসব করছে বিরোধী দলের লোকজন।
অপহরণ, খুন ও গুমের মচ্ছব লাগিয়ে দেশজুড়ে যারা ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করেছে, তারা যেই হোক, তাদের এমন ভয়ংকর দৌরাত্ম্যের মধ্য দিয়ে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রীর ব্যর্থতা স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। এ রকম অবস্থায় তাঁর বিদায় নেওয়া উচিত কি না, প্রথম আলোর প্রতিবেদকের এমন প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেছেন. ‘আমাদের পদত্যাগ কেউ চায়, তা আপনার কাছেই প্রথম শুনলাম।’" [1] [2]
আমরা মনে করি, স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান আমাদের নিরাপত্তা দিতে অক্ষম।
আমরা ব্যর্থতার দায় স্বীকার করে অক্ষম স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খানের পদত্যাগ দাবি করছি।
রেফরেন্স
No comments:
Post a Comment