ব্যবসায়ীদের পরামর্শ
- শিল্পকারখানায় নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের সরবরাহের দাবি জানিয়েছেন দেশের শীর্ষস্থানীয় ব্যবসায়ীরা। তাঁরা বলেছেন, নিরবচ্ছিন্ন গ্যাস-বিদ্যুতের অভাবে শিল্পমালিকদের খরচ বাড়ছে। আবার নতুন শিল্প কারখানায় গ্যাস-বিদ্যুৎ মিলছে না। বিনিয়োগ পড়ে আছে।
- ব্যবসায়ীরা আরও বলেন, আমদানি ও রপ্তানি-প্রক্রিয়া ত্বরান্বিত করতে ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়ক উন্নয়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো নির্মাণ করতে হবে।
- বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে সুদের হার কমাতে হবে।
- ব্যাংক সুদের হার হ্রাস
- নিচে
- রপ্তানি পণ্যের বৈচিত্র্যকরণের ওপর গুরুত্বারোপ করতে হবে।
- জিএসপি সুবিধাসহ অন্যান্য বাণিজ্যিক সুবিধা আদায় করতে সরকারের পক্ষ থেকে লবিস্ট নিয়োগের পাশাপাশি অর্থনৈতিক কূটনীতি বাড়াতে হবে।
- দেশি-বিদেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে বিনিয়োগ বোর্ডে জমা পড়া প্রস্তাবগুলো দ্রুত সমাধান করতে হবে।
- তেল, চিনি, পেঁয়াজসহ নিত্যপণ্যের দাম সহনীয় থাকবে বলে আশ্বাস দেন সংশ্লিষ্ট ব্যবসায়ীরা।
- সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী সৈয়দ মঞ্জুর এলাহী বলেন, শিল্পজমির সমস্যার কারণে বিনিয়োগ বোর্ডে অনেক প্রস্তাব জমা পড়ে আছে। তিনি জানান, ১১৮ কোটি ডলারের বেশ কিছু যৌথ বিনিয়োগের প্রস্তাব পড়ে আছে, যা দ্রুত সমাধান করা উচিত। এ ছাড়া তিনি প্রতিটি বৈঠকে আগের বৈঠকের সিদ্ধান্তগুলোর অগ্রগতি মূল্যায়নের পরামর্শ দেন।
- মন্ত্রী ও সরকারি কর্মকর্তাদের উদ্দেশে সাবেক তত্ত্বাবধায়ক সরকারের উপদেষ্টা ও এমপ্লয়ার্স ফেডারেশনের সভাপতি তপন চৌধুরী বলেন, ‘আপনারা যদি ব্যবসা করতেন, তাহলে হয়রানি-ভোগান্তি বুঝতে পারতেন। আমরা দিনের পর দিন একই দাবি করে আসছি, কিন্তু কাজ হয় না। স্থানীয় বিনিয়োগকারীরা কেন বিনিয়োগ করছেন না, সেটাও বুঝতে হবে।’ বিদ্যুতের সমস্যার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, কোনো শিল্পমালিক ইচ্ছা করে জেনারেটর চালান না। কারণ, জেনারেটর চালালে খরচ বাড়ে।
- এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি ইউসুফ আবদুল্লাহ হারুনের মতে, বিনিয়োগ বাড়াতে ব্যাংকঋণে সুদের হার কমাতে হবে। তিনি খাতভিত্তিক উপপরামর্শক কমিটি গঠনের প্রস্তাব দেন।
- এফবিসিসিআইয়ের আরেক সাবেক সভাপতি মীর নাসির হোসেন বলেন, ‘আমরা পরিবেশ বাঁচাতে চাই, আবার শিল্পও করতে চাই। এখন শিল্প না পরিবেশ—এক জায়গা সমঝোতা করতেই হবে।’ তিনি বলেন, দেশে অপহরণ ও গুম হচ্ছে। এটা সবাইকে শঙ্কিত করছে। এটা রাজনৈতিক কারণে হতে পারে। সরকারকে ব্যক্তিগত নিরাপত্তায় আরও জোর দিতে হবে।
- এফবিসিসিআইয়ের সাবেক সভাপতি আনিসুল হক জানান, অনেক শিল্পমালিক কারখানার জন্য শত শত কোটি টাকার যন্ত্রপাতি কিনে বসে আছেন। কিন্তু জ্বালানির সংযোগ না দেওয়ায় কারখানা চালু করতে পারছেন না। তিনি জিএসপি সুবিধাসহ অগ্রাধিকারমূলক বাজার সুবিধা পেতে লবিস্ট নিয়োগের পরামর্শ দেন।
- তবে লবিস্ট নিয়োগের পরিবর্তে অর্থনৈতিক কূটনীতি বাড়ানোর ওপর গুরুত্বারোপ করেন অ্যামচেমের সভাপতি আফতাব উল ইসলাম। এ ছাড়া তিনি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারিত্বে (পিপিপি) অবকাঠামো উন্নয়নের পরামর্শ দেন।
- এফবিসিসিআইয়ের আরেক সাবেক সভাপতি এ কে আজাদ বলেন, ব্যাংকঋণ নিয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনা কমাতে পারলে সুদের হার কমবে।
- এফবিসিসিআইয়ের বর্তমান সভাপতি কাজী আকরাম আহমদের মতে, গত বছর রাজনৈতিক অস্থিরতা সত্ত্বেও ব্যবসায়ীরা ঐক্যবদ্ধ ছিলেন বলেই অর্থনীতিতে গতি রয়েছে।
- সিটি গ্রুপের চেয়ারম্যান ফজলুর রহমান, মেঘনা গ্রুপের চেয়ারম্যান মোস্তফা কামাল ও আবুল খায়ের গ্রুপের চেয়ারম্যান আবুল কাশেম সভায় আশ্বাস দেন, আগামী রমজানে নিত্যপণ্যের দাম স্থিতিশীল থাকবে। সরবরাহ ব্যবস্থায় যথেষ্ট পণ্য রয়েছে।
- সভায় আরও বক্তব্য দেন বাণিজ্যসচিব মাহবুব আহমেদ, তৈরি পোশাক কারখানার মালিকদের সংগঠন বিজিএমইএর সভাপতি আতিকুল ইসলাম, ফরেন ইনভেস্টরস চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের (এফআইসিসিআই) সভাপতি রূপালী চৌধুরী, ঢাকা চেম্বার সভাপতি শাহজাহান খান, রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি সালাম মুর্শেদী, বিটিএমএর সভাপতি জাহাঙ্গীর আলামিন, প্লাস্টিক পণ্য উৎপাদক সমিতির সভাপতি জসিম উদ্দিন, হিমায়িত পণ্য রপ্তানিকারক সমিতির সভাপতি আমিনউল্লাহ, উইমেন চেম্বার অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজের সভাপতি সঙ্গীতা আহমেদ প্রমুখ।
ব্যাংক সুদের হার হ্রাস
- সুদের হার কমাতে দেশের পুরো ফাইনান্সিয়াল সিস্টেমে সংস্কার প্রয়োজন। শিল্প ঋণ কমাতে ব্যাংকে যারা অর্থ জমা রাখেন তাদের সুদও কমবে।
- আবার ব্যাংকে অর্থ রেখে লাভের পরিমাণ কমলে মানুষ ব্যাংকে অর্থ রাখার পরিবর্তে বিনিয়োগে আকৃষ্ট হবে।
- বিনিয়োগের জন্য শেয়ার বাজারে আস্থা ফিরিয়ে আনতে হবে।
- জনগণ জমি কেনা, ব্যবসা ইত্যাদিতেও বিনিয়োগ করবে।
- বিনিয়োগ বাড়লে জিডিপি প্রবৃদ্ধি বাড়বে।
- ব্যাংকঋণ নিয়ে কেলেঙ্কারির ঘটনা কমাতে পারলে সুদের হার কমবে। দুর্নীতি দমন কমিশনের নিরপেক্ষ শক্তিশালী ভূমিকা গুরুত্বপূর্ণ।
দেশের অর্থনীতির সমস্যাগুলো সমাধানে আমরা সরকারের কার্যকর ভূমিকা দেখতে চাই।
No comments:
Post a Comment