Friday, December 20, 2013

ঐক্যবদ্ধ শক্তির মাধ্যমে জনগণের অধিকার আদায়

বিরোধী দলের মত আমলে না নিয়ে তত্ত্বাবধায়ক সরকার বাবস্থা বাতিল করে বর্তমান সরকার নির্বাচন নিয়ে জনমনে যে সংশয় তৈরি করেছিল, বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় বিনা নির্বাচনে সংখ্যাগরিষ্ঠ আসনে জয়ী হয়ে সরকার সেই নির্বাচনকে অর্থহীন করে তুলেছে। ৫ বছর পর পর আমাদের দেশের জনগণের গনতন্ত্রে অংশগ্রহণের যে একমাত্র সুযোগ আসে, আগামী নির্বাচনে তাও নেই।

অপরদিকে, বিরোধী দল জনগণকে নিয়ে আন্দোলন না করে ককটেল বোমা, আগুন দিয়ে একদিকে নির্বিচারে মানুষ হত্যা এবং অন্যদিকে হরতাল-অবরোধ ডেকে, বাড়িঘর, গার্মেন্টস পুড়িয়ে দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংসের দিকে নিয়ে গেছে।

তাদের সরবাগ্রে ছিল মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের বাঁচাতে জামায়াতে ইসলামীর তাণ্ডব, মানুষ হত্যা।

অর্থনীতি ধ্বংসের পাশাপাশি দেশের শিক্ষাবাবস্থা স্থবির হয়ে পড়েছে - শিক্ষার্থীদের শিক্ষাজীবন আজ বিপন্ন। পেশাজীবীরা কর্মহীন হয়ে পড়েছেন। অনেকে বিদেশ পাড়ি দেওয়ার পরিকল্পনা নিচ্ছেন। ভিন্ন ধর্মাবলম্বী জাতিগোষ্ঠীর মানুষ আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন। ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা, যারা প্রতিদিনের রোজগারের উপর বেঁচে থাকেন, দেশের অচলাবস্থায় তাদের জীবনধারণ অসম্ভব হয়ে উঠেছে।

বাংলাদেশে এমন একটি শাসন বাবস্থা প্রচলিত যেখানে সরকারি দল আইন শৃঙ্খলা বাহিনী, বিচার বিভাগ, প্রশাসন সহ সমস্ত কিছুর নিয়ন্ত্রণে থাকে। এমন একটি বাবস্থায় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে ছাড়া সুষ্ঠু নির্বাচন সম্ভব নয়। সিটি কর্পোরেশান নির্বাচনগুলোতে বিপুল ভোটে হারা এবং সাম্প্রতিক জরিপগুলোতে পিছিয়ে থাকা আওয়ামী লীগ নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্থান্তরে রাজি নয়। কাজেই, যতদিন অবাধ, সুষ্ঠু ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের লক্ষ্যে নিরপেক্ষ সরকারের হাতে ক্ষমতা হস্তান্তর হবে না, ততদিন দেশে একটা অচল অবস্থা বিরাজ করবে। সশস্ত্র বাহিনী মাঠে নামার পর আইন শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও দেশ কার্যত অচল হয়ে আছে - তার দায়ভার সরকারের।

শেয়ার বাজার কেলেঙ্কারিতে প্রায় ৩০ লক্ষাধিক বিনিয়োগকারীর অনেকে সর্বস্ব হারিয়ে ফেলেন। হরতাল-অবরোধ এর কারণে বাবসায়িরাও আজ দেউলিয়া হওয়ার পথে। দেশের অর্থনীতি প্রায় ধ্বংসের সম্মুখীন। অনিশ্চিত গন্তব্যে দেশের অর্থনীতি। অনিশ্চয়তায় আগ্রহ হারাচ্ছে পোশাক ক্রেতারা। মধ্যমেয়াদি সংকটের পথে বাংলাদেশ?

রাজনীতিবিদরা ক্ষমতা ধরে রাখতে কিংবা দখল করতে জনগণকে মুখোমুখি অবস্থানে দাঁড় করিয়ে দেবেন - এ অবস্থা আমরা আর মানতে পারছি না।

বাংলাদেশ অন্যায় - অপরাধ - দুর্নীতিতে চরমভাবে নিমজ্জিত হয়ে পড়েছে। টানা কয়েক বছর বিশ্বের সবচেয়ে দুর্নীতিগ্রস্থ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ শীর্ষে ছিল। দেশে শত শত খুন করেছেন বা করিয়েছেন এবং শত শত ধর্ষণ করেছেন এমন রাজনীতিবিদও আছেন। আইন শৃঙ্খলার উরধে থাকা সাংসদ, নেতাদের কারও রয়েছে নিজস্ব নির্যাতন সেল, কারও খেলাপি ঋণের পরিমাণ কোটি কোটি টাকা, কেউ কেউ খুনের মামলা নিয়ে দিব্যি রাজনীতি করা অব্যাহত রাখেন। আবু রেজা মুহাম্মদ নিজামুদ্দিন নদভি এক বিস্ময় মানব। বিতর্কিত ১২ জন পেলেন আ.লীগের টিকিট। ত্বকীর মত সোনার টুকরা ছেলেকে এদেশে খুন হতে হয়। রাজনীতিবিদরা দুর্নীতি করে কাউকে অবৈধ সুবিধা দিলে কারও কিছু বলার থাকে না। রাজনীতিবিদদের লাখ লাখ টাকা ঘুষ দেওয়া ছাড়া চাকরি মেলে না। কয়েক লাখ টাকা দিয়ে মেডিক্যাল ভর্তি পরীক্ষার প্রশ্নপত্র পর্যন্ত কেনা যায় - এমন নজির দেশে স্থাপিত হয়েছে।

রাজনীতি আজ হয়ে উঠেছে অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যম। কুমিল্লার মন্ত্রী ও আট সাংসদের সম্পদ অনেক বেড়েছে। সাংসদ হয়েছেন তাঁরা সম্পদ বেড়েছে স্ত্রীদের। বদির আয় বেড়েছে ৩৫১ গুণ। ফুলে-ফেঁপে উঠেছে সম্পদ। ৫ বছরেই সম্পদের পাহাড়নূর-ই-আলমের আয় বেড়েছে ৩২ হাজার ৯৮৫ শতাংশ। কারও বিরুদ্ধে ৬ কোটি টাকার অবৈধ সম্পদ অর্জনের অভিযোগ তোলা হলে তিনি আক্ষেপ করে বলেন ৬০০ কোটি টাকার মালিক হতে পারতাম! (গোস্সা করবেন না হানিফ সাহেব!)

কিন্তু অন্যায়কারিরা সংখ্যায় মুষ্টিমেয়। জনগণের ঐক্যের সামনে দাঁড়ানোর ক্ষমতা তাদের নেই। আজ সময় এসেছে জনগণের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার।

একদিকে দেশের অর্থনীতি ধ্বংস হতে থাকবে, আরেকদিকে রাজনীতিবিদরা সম্পদের পাহাড় গড়তে থাকবেন - এ অবস্থা আর চলতে দেওয়া যায় না।

আমরা দেশের রাজনীতিতে নতুন সূর্যের উদয় দেখতে চাই। এ লক্ষ্যে সবার আগে দরকার জনগনের ভোটের অধিকার সংরক্ষিত হয় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে এমন একটি নির্বাচন। জনগণকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। নিজেদের ভোটের অধিকার, জীবনের নিরাপত্তার অধিকার এবং সম্পদের অধিকার ঐক্যবদ্ধ হয়ে আদায় করতে হবে।

আর কোন হরতাল - অবরোধ, জ্বালাও - পোড়াও, ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী মেনে নেওয়া হবে না।

ব্লগ, সোশ্যাল মিডিয়ায় উঠুক সমস্ত অন্যায় - অবিচার - দুর্নীতি, মানুষ হত্যা, জ্বালাও পোড়াও এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ।

ঢাকায় ৭০ লক্ষ থেকে ১ কোটি মানুষ জড়ো হবে

  • জনগণের ভোটের অধিকার রক্ষায় নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের অধীনে নির্বাচনের দাবিতে এবং 
  • হরতাল - অবরোধ, জ্বালাও - পোড়াও, সংখ্যালঘু নির্যাতন, ব্যবসাবাণিজ্য এবং শিক্ষাব্যবস্থা ধ্বংস সহ সবরকম ধ্বংসাত্মক কর্মসূচী বন্ধ করে শান্তির পক্ষে। 

অহিংসভাবে অধিকার আদায় করে জনগণ বাড়িতে ফিরবে।

No comments:

Post a Comment