Saturday, April 26, 2014

"যৌতুক প্রথামুক্ত বাংলাদেশ" গড়ার পথে অগ্রযাত্রা

একবিংশ শতাব্দীতে এসেও যৌতুকসহ বিভিন্ন কারণে দেশে নারী নির্যাতনের হার এখনও আশঙ্কাজনক পর্যায়ে। দেশে এখনও অহরহ বাল্যবিবাহ ঘটে।

নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠায় গ্রামে গ্রামে নারীদের মাঝে ঐক্য গড়ে উঠবে - এই লক্ষ্যে কাজ করার সময় এসেছে।

নাগরিক শক্তি নারী অধিকার প্রতিষ্ঠায় বদ্ধপরিকর। আমরা প্রত্যাশা করি, নারীরাই দায়িত্ব নিয়ে এগিয়ে আসবেন।

আমরা কি পারি না, যেসব বৃদ্ধ বাবা অর্থাভাবে মেয়ের বিয়ে দিতে পারছেন না - তাদের চোখের অশ্রু মুছে পাশে গিয়ে দাঁড়াতে?

যুবকরা কেন পিছিয়ে থাকবে? গ্রামের যেসব যুবক আড্ডা দিয়ে সময় কাটাত, তারা কি চাইলেই পারে না এক হয়ে নতুন নতুন উদ্যোগ নিয়ে সবার চোখে “হিরো” হয়ে উঠতে? পারে না যৌতুক, বাল্যবিবাহ এবং এসব থেকে উদ্ভূত বিভিন্ন সামাজিক সমস্যা, যেমন নারী নির্যাতন, এর বিরুদ্ধে সবাই মিলে অবস্থান নিতে? 

"যৌতুক প্রথামুক্ত বাংলাদেশ" - এই লক্ষ্য নিয়ে এখনই কাজ শুরু হোক। নারীরা ঐক্যবদ্ধ হলে এক একটি ইস্যুতে তারা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে পারেন। নাগরিক শক্তি এক্ষেত্রে সবরকম সহায়তা করবে।


আজকের পত্রিকায় 

    "ময়মনসিংহে দুস্থ, অস্বচ্ছল ও গরিব পরিবারের ১০ জোড়া বর-কনের যৌতুকবিহীন বিয়ে সম্পন্ন করেছে বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদ বাংলাদেশ।

    শনিবার সকালে মুক্তাগাছা উপজেলার দুল্লা ইউনিয়নের সালতা গ্রামে এ বিয়ের আয়োজন করা হয়।

    যৌতুকের অভিশাপ থেকে সমাজকে মুক্ত করার আন্দোলনের অংশ হিসেবেই এ সংগঠনটি এ যৌতুকবিহীন বিয়ের আয়োজন করে। যৌতুকবিহীন এ বিয়ে পড়ান ওই সংগঠনের সভাপতি ও ঐতিহাসিক শোলাকিয়া ঈদগাহ মাঠের খতিব আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসউদ।

    এদের মধ্যে লিলি নামের এক মেয়ের যৌতুকের অভাবে বিয়ে হচ্ছিল না। যৌতুকের কারণে দুই দফায় দু’টি ভালো সম্বন্ধ ছুটে যায়। এ কারণে মানসিকভাবে ভেঙ্গে পড়েছিলেন লিলি’র বাবা-মা, এমনকি লিলিও। যৌতুক ছাড়া বিয়ে হওয়ায় খুশি হয়েছেন লিলি ও তার বাবা-মা।

    শুধু লিলি একাই নয়, তার মতো দুস্থ, অস্বচ্ছল ও গরিব পরিবারের আরো ১০ কনে বিয়ের পিড়িতে বসেছে।

    ব্যতিক্রমী এ বিয়েতে অতিথির তালিকায় ছিলেন ময়মনসিংহ-৫ (মুক্তাগাছা) আসন থেকে বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় নির্বাচিত সংসদ সদস্য সালাহউদ্দিন মুক্তি, স্থানীয় উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) বাবুল মিয়া, স্থানীয় পৌর মেয়র আব্দুল হাই আকন্দ, থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কামাল উদ্দিন প্রমুখ।

    যৌতুকবিহীন বিয়ে উপলক্ষ্যে সালতা গ্রামে ছিল অন্য রকম আমেজ। পাঞ্জাবি আর টুপি পড়ে বর আর লাল বেনারশি পড়ে কনেদের বিয়ের আসরে আনা হয়।

    বিয়ের উপহার হিসেবে নতুন দম্পত্তিরা পেয়েছেন একটি করে ভ্যান ও সংসার সাজানোর যাবতীয় উপকরণ।

    বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা ইসলাহুল মুসলিমিন পরিষদ বাংলাদেশের সভাপতি আল্লামা ফরিদ উদ্দিন মাসুদ বলেন, ‘আমাদের দেশে যৌতুক একটি ভয়াবহ সামাজিক ব্যাধি হিসেবে দেখা দিয়েছে। শুধুমাত্র যৌতুকের কারণেই অনেক অস্বচ্ছল পরিবারের মেয়েদের বিয়ে হয় না।

    এসব বিষয় মাথায় রেখেই দীর্ঘদিন যাবত আমরা কাজ করছি এবং যৌতুকবিহীন বিয়ের এ ধরণের উদ্যোগ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করছি।’

    নতুন জুটি রাশি আক্তার-মাসুদ, লাইলী খাতুন-ইসরাফিল ও রাজিয়া আক্তার লিপি-আশরাফুল ইসলাম যৌতুক বিহীন বিয়ের জন্য সংগঠনটির প্রতি কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন।"
  • ময়মনসিংহে ১০ জোড়া বর-কনের যৌতুকবিহীন বিয়ে


বাংলাদেশের নারীরা

No comments:

Post a Comment