Tuesday, January 7, 2014

আর আওয়ামী বাংলাদেশ - জাতীয়তাবাদী বাংলাদেশের নামে দেশ বিভক্তি নয়, এবার নাগরিক শক্তির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ

আওয়ামী লীগ এবং তার জোট আর বিএনপি-জামায়াত নেতৃত্বাধীন জোট দুটি জোট দেশকে দুইভাগে বিভক্ত করে ফেলেছে।

অন্যায় সুবিধা দেওয়ার মাধ্যমে দুই জোট দুটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী তৈরি করেছে।

মুক্তিযুদ্ধের চেতনা এবং অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশের লোক দেখানো আশ্বাস দিয়ে আওয়ামী জোট একটি পক্ষ তৈরি করেছে এবং তাদের প্রকৃত চিত্র আড়াল করেছে। অন্যদিকে ইসলামী চেতনার মন ভোলানো কথা বলে বিএনপি-জামায়াত আরেকটি পক্ষ তৈরি করেছে এবং ক্ষমতায় গিয়ে বাংলাদেশকে পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ দুর্নীতিগ্রস্থ দেশ হিসেবে অধিস্ঠ করে এদেশের পরিশ্রমী, আবেগপ্রবণ, দেশপ্রেমিক জনগণের মাথা নিচু করেছে।


হওয়া উচিত ব্যক্তির চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে দেশ বড়। আমাদের দেশে তার উল্টো - দেশের চেয়ে দল বড়, দলের চেয়ে ব্যক্তি বড়।


একজন ছাত্রলীগ নেতা চাঁদাবাজি করলে আওয়ামী লীগ দেখেও না দেখার ভাব নেয়। আওয়ামী নেতা সন্ত্রাসের রাজত্ব কায়েম করলে আওয়ামী লীগ তাকে সাংসদ পদপ্রার্থী করে পুরস্কৃত করে। অন্যদিকে, জামায়াত সংখ্যালঘুদের উপর হামলা চালালে, কারখানা জ্বালিয়ে - পুড়িয়ে দিলে, "রগ কাটলে " বিএনপি জোট নিশ্চুপ থেকে তাদের প্রশ্রয় দেয়। নির্বাচনী সহিংসতায় দেশে শতের উপর সাধারণ মানুষকে হত্যা করা হয়েছে, ব্যবসায়ীরা দেয়লিয়া হওয়ার পথে - অথচ বিএনপি জোটের এ ব্যাপারে কোন বিকার নেই। আওয়ামী লীগের যদি থাকতো, জনগণকে বৃদ্ধাঙ্গুলি দেখিয়ে দেশে একতরফা নির্বাচন করত না।

সমগ্র দেশের ঐক্য থাকলে আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে আমরা আমাদের দাবি দাওয়া আদায় করে নিতে পারি। আমরা দেখেছি, আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে বিএনপির অবস্থানকে আওয়ামী লীগ বিরোধিতা করে, আওয়ামী লীগের অবস্থানকে বিএনপি বিরোধিতা করে। প্রবাসীদের নানা দলীয় সংগঠনে দ্বিধাবিভক্তি প্রবাসে আমাদের অবস্থানকে দুর্বল করে দিচ্ছে। এভাবে আন্তর্জাতিকভাবে আমাদের দুর্বল অবস্থানের কারণে আমরা ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছি।


অন্যায়কারীরা সংখ্যায় নগণ্য। জনগণের মাঝে ঐক্য নেই বলেই দেশকে দুই ভাগে বিভক্ত করে আজ অন্যায়কারীরা সুযোগ নিতে পারছে। জনগণের মাঝে একতা থাকলে অন্যায়কারীরা কখনই সুযোগ নিতে পারবে না।


ক্রিকেট খেলায় একটা ম্যাচ জিতলে সারাদেশ একসাথে উল্লাস করে। হৃদয়ে একটা গভীর আনন্দের অনুভূতি - সারা দেশ মিলে শুধু একটা উপলক্ষে করার সুযোগ পায়। দুই জোট আমাদের ঐক্যবদ্ধ আনন্দ উল্লাসের অধিকার কেড়ে নিয়েছে।


আমরা আর আওয়ামী বাংলাদেশ - জাতীয়তাবাদী বাংলাদেশের নামে দেশ বিভক্তি চাই না, এবার আমরা চাই নাগরিক শক্তির নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ বাংলাদেশ।


নাগরিক শক্তি জানে এক একটা মানুষের মাঝে কি বিপুল শক্তি লুকিয়ে আছে। প্রকৃতপক্ষে এই শক্তিই নাগরিক শক্তি। নাগরিক শক্তি দেশের ১৬ কোটি মানুষকে ঐক্যবদ্ধ করবে এবং ১৬ কোটি মানুষের মাঝের শক্তিকে জাগ্রত করে তাকে সম্মিলিত লক্ষ্যে পরিচালনা করবে। সেই শক্তির সামনে বাঁধা হয়ে দাঁড়ানোর ক্ষমতা কারোরই নেই। 


নাগরিক শক্তি দেশের রোল মডেলদের সামনে নিয়ে এসে জনগণের জন্য উন্নত আদর্শ - উদাহরণ তৈরি করে দেবে। ১৬ কোটি মানুষকে আলোকিত মানুষ হওয়ার আহ্বান জানাবে।

নাগরিক শক্তির প্রচার দুই - চারজন নেতার বক্তৃতা - বিবৃতির মাধ্যমে হবে না, বরং জনগণের ভালবাসার মাধ্যমে হবে। যারা আমাদের মতাদর্শের সাথে একাত্মতা প্রকাশ করবেন, আমাদের সাথে একসাথে স্বপ্ন দেখবেন এবং বাস্তবায়নে পদক্ষেপ নেবেন তারাই বাকিদের মাঝে নাগরিক শক্তিকে ছড়িয়ে দেবেন।

দুই জোটের প্রতিটির হয়ত ৩০০ নেতা বা ৬০০ বা ৩০০০।
কারণ এই ৩০০ বা ৬০০ জনই এসব জোটে থেকে সুবিধা পান বলে আনুগত্য প্রকাশ করেন।

কিন্তু নাগরিক শক্তির এখনই লক্ষ লক্ষ নেতা। কিছুদিনের মাঝে আমরা কোটি কোটি নেতা গড়ে তুলবো। কারণ, জনগণই আমাদের নেতা। জনগণ ঐক্যবদ্ধ থেকে নিজ নিজ স্বপ্ন বাস্তবায়নের মাধ্যমে দেশকে এগিয়ে নেবেন। আমরা তার জন্য প্রয়োজনীয় প্ল্যাটফর্ম গড়ে দেবো। যারা সামনে থাকবেন তারা ভালবাসায় সিক্ত সম্মানিত প্রতিনিধি মাত্র।

চলুন, আমরা ঐক্যবদ্ধ হই।

No comments:

Post a Comment