Friday, November 1, 2013

দেশের জনগণের পক্ষে আবেদন

মাননীয় প্রধানমন্ত্রী এবং বিরোধী দলীয় নেত্রীর নির্বাচনকালীন সরকার প্রস্তাবের মাঝে আমরা যে আশার আলো দেখেছিলাম, তা এক ঝলকে নিভে গেছে তিনদিন ব্যাপী হরতাল এবং সেই তিনদিনের প্রতিদিনই নিহত এবং হতাহতের ঘটনায়।

দুই নেত্রী বহুদিন পর কথা বলছেন। এমন অবস্থায় আমরা দেশের জনগণ যখন নির্বাচনকালীন সরকার বিষয়ে দুই নেত্রীর মতৈক্যের আশায় ছিলাম, তখন আমরা দেখলাম মূল সমস্যার সমাধান না করে দুই নেত্রীর পারস্পরিক আক্রমণ।


বিরোধী দল “দা-কুড়াল” বা অন্য কোন উপায়ে সহিংস কর্মসূচি গ্রহন করলে দেশের সচেতন নাগরিকরা তীব্রভাবে এর প্রতিবাদ করবেন এবং জনগণ আগামী নির্বাচনে তাদের প্রত্যাখ্যান করবে।

অন্যদিকে, সরকারি দল আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে ব্যবহার করে দমন - নিপীড়ন চালালে তারা সুষ্ঠু নির্বাচন অনুষ্ঠানের যে প্রতিশ্রুতি দিচ্ছে তা হাস্য রসাত্মক বিষয়ে পরিণত হবে।

দেশে দুই দলের এই মুখোমুখি অবস্থানের সুযোগ নিয়ে মানবতাবিরোধী যুদ্ধাপরাধীদের রক্ষা করতে কোন দল ধর্মের দোহাই দিয়ে যুবকদের সহিংসতা চালানো কিংবা অপপ্রচার, গুজব রটানোর কাজে ব্যবহার করলে সচেতন নাগরিকরা প্রতিবাদ করবেন এবং যুবকরাও এই পথ পরিহার করবেন। ইসলাম ধর্মে উদ্দেশ্য প্রণোদিত সহিংসতা কিংবা অপপ্রচারের (ইসলাম শব্দটি এসেছে "সালাম" থেকে, যার অর্থ "শান্তি"; ইসলামে গীবত করা মৃত ভাইয়ের গোশত খাওয়ার মত বড় অপরাধ) কোন স্থান নেই।


জনগণ স্বতঃস্ফূর্ত ভাবে প্রতিবাদ হিসেবে হরতাল পালন করলে তাতে কারোরই সমস্যা থাকার কারন নেই - কারণ যারা প্রতিবাদ জানাতে চান শুধুমাত্র তারাই হরতাল পালন করবেন। কিন্তু জনগণের জানমালের ক্ষতি করে, "জ্বালাও - পোড়াও" চালিয়ে, ভয় দেখিয়ে জনগণকে দেশের অর্থনীতির জন্য চরমভাবে ক্ষতিকর হরতাল পালনে বাধ্য করা হলে জনগণ সম্মিলিতভাবে তা বর্জন করবে। দেশের বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ পরীক্ষার সময় হরতাল দিয়ে আমাদের রাজনীতিবিদরা কোমলমতিদের পড়াশোনার ক্ষতি করবেন না বলেই আমরা আশা করি।


দেশের জনগণ আর সহিংস কর্মসূচি কিংবা এর বিরুদ্ধে দমন - নিপীড়ন কোনটাই দেখতে চায় না।

দুই নেত্রী নিজেরা আলোচনা করে ঐক্যমতে পৌঁছাবেন এমন আশাও আমরা করতে পারছি না।

আমরা উভয় দলের কাছে গ্রহনযোগ্য এমন একজনকে দেখতে চাই যিনি নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে দুই দলের প্রস্তাবের দূরত্ব দূর করে নির্বাচনকালীন সরকার গঠন করবেন এবং একটি সুষ্ঠু, গ্রহণযোগ্য নির্বাচন জাতিকে উপহার দেবেন।

দুই দল দ্রুত নির্বাচনকালীন সরকার প্রধান হিসেবে গ্রহনযোগ্য একজনকে মনোনীত করে সংবিধান সমুন্নত রাখতে প্রয়োজনে তাকে উপনির্বাচনে বিজয়ী করে আনতে পারে।


দুই দল এই ব্যাপারে একমত হলে দেশ তার আরও সন্তান হারানোর সম্ভাবনা থেকে মুক্তি পাবে। জনগণের প্রতিনিধি রাজনীতিবিদরা কি আমাদের সাধারণ জনগণের কথা একটি বার ভাববেন না?

No comments:

Post a Comment